বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

অন্ধকারের শঙ্কায় ভুগছে মার্কিন ভ্রমণ খাত

| প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : অন্ধকারের শঙ্কায় ভুগছে মার্কিন ভ্রমণ খাত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একর পর এক নির্দেশ এ শঙ্কাকে ঘনীভ‚ত করছে। মার্কিনমুলুকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, বিমানবন্দরে যাত্রী আটক, ভিসাপ্রাপ্তির জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই ও ফ্লাইটে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস বহনের ওপর শর্তারোপ যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী, শরণার্থী আগমন ও অনভিপ্রেত সন্ত্রাসী ঘটনা এড়াতে গত জানুয়ারি থেকে একের পর এক নির্দেশ দিয়েই চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব নির্দেশের ফল যা-ই হোক না কেন দীর্ঘমেয়াদে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মার্কিন ভ্রমণ খাত। নির্বাচনে জয়লাভের পর ওয়াশিংটনের অন্যান্য লবি গ্রুপের মতো মার্কিন ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনও (ইউএসটিএ) ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানায়। প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের সময় বিচক্ষণ এ ব্যবসায়ীর শাসনামলে মার্কিন ভ্রমণ খাতকে বহুদূর এগিয়ে নেয়ার আশবাদ ব্যক্ত করেন ইউএসটিএর প্রধান নির্বাহী রজার ডো। তবে অতি দ্রুতই ঘটনাপ্রবাহ প্রত্যাশার বিপরীতে বইতে শুরু করে। নিয়মিত বিরতিতে লাগাতার ভ্রমণ খাত-বিষয়ক বিধি-নিষেধ আরোপ করে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এসব বিধি-নিষেধে হুমকির মুখে পড়েছে ২৫ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন ভ্রমণ খাত এবং এতে কর্মরত প্রায় দেড় কোটি কর্মীর ভবিষ্যৎ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, মেক্সিকো ও চীনা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। আলোচনা আশানুরূপ না হওয়ায় তা দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরেছে, যার প্রভাব পড়ছে দেশগুলোর ভ্রমণকারীর ওপর। এছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমপ্রধান সাতটি রাষ্ট্রের অভিবাসী ও শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও পরবর্তীতে তালিকা থেকে ইরাকের নাম বাদ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশের বিমানবন্দর থেকে পরিচালিত ফ্লাইটে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে হোয়াইট হাউজ। এদিকে গত সপ্তাহে ভিসাপ্রাপ্তির যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আরো কঠোর করে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিসা প্রার্থীর কার্যক্রমও খতিয়ে দেখা হবে। ৬ মার্চ থেকে হোয়াইট হাউজের নির্দেশে এ প্রক্রিয়া কার্যকর করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২৬ মার্চ এক ই-মেইল বার্তায় মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীদের পরিবর্তিত নিয়ম-নীতির বিষয়ে অবহিত করা হবে। মার্কিন ভিসা মওকুফের আওতায় থাকা ৩৮টি দেশ এর দ্বারা প্রভাবিত না হলেও বাকি দেশগুলোর লাখ লাখ ভ্রমণকারীর জন্য বর্তমানে মার্কিন মুলুকে ভ্রমণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এর ফলে বছরে দেড় কোটি ভ্রমণকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করছে ইউএসটিএ। ভিসার নতুন নিয়ম আরোপের পর এক বিবৃতিতে ট্রাম্পকে বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানায় ইউএসটিএ। যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের পথ রোধ করলেও দেশটির ব্যবসার দুয়ার সবসময় খোলা, এ বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশের মানুষদের যুক্তরাষ্ট্রে বাধাহীন ভ্রমণের নিশ্চয়তা প্রদান করতে ট্রাম্পের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। ডো বলেন, ভ্রমণ খুবই সংবেদনশীল একটি বিষয়, সম্ভাব্য গন্তব্যের বিষয়ে ভ্রমণকারীর দৃষ্টিভঙ্গি ভ্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ার হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের বিষয়ে কড়াকড়ি নিয়মনীতি প্রণয়ন করে, যার প্রভাবে চলতি শতকের প্রথম দশকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভ্রমণকারীদের আনাগোনা বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্রে তা পড়তির দিকে ছিল। এ কারণে একুশ শতকের প্রথম ১০ বছরকে ‘হারিয়ে যাওয়া দশক’ আখ্যায়িত করে ইউএসটিএ। পরবর্তীতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।ব্লুমবার্গ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন