শীতের আগমনে বেড়ে ওঠা খেজুর গাছের কদর এখন অনেক বেশি। মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এখানকার উৎপাদিত খেজুর গুড়ের পাটালি রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের গাছিরা।
উপজেলার প্রতিটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাড়া মহল্লায় শুরু হয়েছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীর কাজ। গাছিরা প্রতিদিন দুপুর থেকে খেজুর গাছের মাথার কাছাকাছি জায়গায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় গাছ কেটে রস সংগ্রহরে জন্য হাড়ি বাঁধছেন। আবার ভোরে উঠে গাছ থেকে রস ভর্তি হাড়ি নামিয়ে ঐ রস জ্বাল করে তৈরি করছেন পাটালী, দানাদার ও ঝোলা গুড়। রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজে যেন এই অঞ্চলের গাছিদের এখন দম ফেলার সময় নেই। সব মিলিয়ে গ্রামীণ জীবনে এখন বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শীতের সকালে আমন ধানের মুড়ি আর খেজুরের সুমিষ্ট রস কে না পছন্দ করে। লালপুরের ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রস ও নতুন চালের ক্ষির-পায়েশে, পিঠাপুলি সবার পছন্দ। প্রতিবছর নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে পিঠাপুলি, ক্ষির ও পায়েশ তৈরীকে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আসতে থাকে মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনী আত্মীয়স্বজন।
কথা হয় উপজেলার গাছি সাইদুর রহমান ও শাহীন আলীর সঙ্গে তারা জানায়, এ বছর তারা আগাম গাছ ঝুড়ার কাজ শেষ করলেও শীত দেরি করে নামায় রস সংগ্রহে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। বাজারে নতুন গুড় উঠতে শুরু হয়েছে। শীত বেশি পড়লে রসও বেশি নামবে। বর্তমান বাজারে খাঁটি গুড়ের চাহিদাও বেশ ভালো। তবে গ্রামবাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে এই খাতটি বিলুপ্তির পথে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন