আসন্ন ইউপি নির্বাচনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে একমাত্র মহিলা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জোৎস্না বেগম জনতার নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা দিয়ে তার দেবর আসাদুজ্জামান ভুট্টুকে মারপিট করা হয়েছে। গুরুতর আহত ভুট্টু রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি রোববার বিকেলে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মন্ডলেরহাটস্থ প্রার্থী জনতার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঘটেছে। জনতা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী।
ঘটনাস্থল সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতার নির্বাচনী কার্যালয়ে তার দেবর মামুন সরকার নির্বাচনী প্রচারণার রেকর্ডিং সাউন্ড বক্সে চেক করছিলেন। এসময় পাশের মুদি দোকানদার ও ওই ইউনিয়নের পূর্ব ছাপডহাটী (হাউদের ভিটা) গ্রামের মৃত মনছুর আলীর ছেলে মশিউর রহমান বাঁধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন প্রার্থীর দেবর আসাদুজ্জামান ভুট্টু।
এসময় স্থানীয়রা আহত ভুট্টুকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন মশিউর রহমান। সেই সাথে মন্ডলের হাটের দু'একটা চায়ের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বাজার হয়েছে জনশূন্য। এ অবস্থায় এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জনতার দেবর সুমন সরকার বলেন, 'মন্ডলেরহাটস্থ আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রচারণার রেকর্ড সাউন্ড বক্সে পরীক্ষা করা হচ্ছিল। পাশের দোকানদার মশিউর রহমান এতে বাঁধা দিলে তর্কাতর্কি হয়। এসময় মশিউরের ভাতিজা মিল্টন, মিথুন ও রানা এসে আমার বড় ভাই আসাদুজ্জামান ভুট্টুকে ধাক্কা ও কিল-ঘুষি মারে এবং পাশের চায়ের দোকান থেকে কাঠখড়ি এনে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। এতে সে গুরুতর আহত হয়।' অভিযুক্ত মশিউর রহমান আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জোৎস্না বেগম জনতা বলেন, 'গত শুক্রবার নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে ওই অফিস উদ্বোধন করা হয়। গতকাল শনিবার মশিউর রহমান অফিস করতে বাঁধা দেয়। আমরা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। রোববার ঘটনার সময় সাউন্ড বক্সে রেকর্ডিং পরীক্ষা করার সময় সে আবারও বাঁধা দেয়। এতে আমার লোকজন প্রতিবাদ করতে গেলে মশিউর ও তার ভাতিজারা আমার দেবরকে মারপিট করেন। এখন সে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'এঘটনায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছি। আমি প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।'
থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ জানান, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় কোন বাঁধা নেই৷' তিনি আরও বলেন 'ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে ইনশাআল্লাহ। এতে সন্দেহের কোন কারণ নেই।'
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন