প্রশ্ন : নিজ বাসস্থান থেকে ৪৮ মাইল দূরত্বে সফরে গেলে নামায কসর করতে হয়। আমি সিলেট থেকে ঢাকা এসেও কি কসর পড়বো? এ যুগে তো উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগে ৪/৫ ঘন্টায় এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া যায়। এমন সুবিধাজনক সফরেও কি কসর পড়া যায়?
উত্তর : সফরের ক্লান্তি বা কষ্টের সাথে কসরের সম্পর্ক নেই। শরীয়ত নির্ধারিত তিন মনযিল বা ৪৮ মাইলের দূরত্বে সফরের শুরু থেকেই সফরের অন্যান্য শর্ত পাওয়া গেলে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযগুলো অর্ধেক পড়া শরীয়তের হুকুম। এটা সর্বকালের জন্যই মহান আল্লাহপাকের দেয়া একটি সুবিধা। বর্তমান যুগের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার দরুন এ হুকুম রহিত হয়ে যাবে না।
প্রশ্ন : কোনো লোকের নামাজে জানাজায় কেউ যদি লোকটি সম্পর্কে তিনবার প্রশ্ন করে যে, ‘লোকটি কেমন ছিল?’, আর যদি তিনবারই জনগণ উত্তর দেয় যে, ‘লোকটি ভালো ছিল।’ তাহলে নাকি লোকটি জান্নাতি। এর ব্যাখ্যা চাই। কারণ এখানে তো হাক্কুল্লাহ্ ও হাক্কুল ইবাদের ব্যাপার রয়েছে। কেউ যদি তা সঠিকভাবে পালন না করে, তাহলে জনগণের কথায় কেমনে জান্নাতি হয়ে যাবে?
উত্তর : জানাজার নামাজে এভাবে প্রশ্ন করা ও জবাব চাওয়া একটি রেওয়াজ মাত্র। এমন করা শরীয়তে নেই। হাদীস শরীফে একটি কথা আছে, বিনা প্রশ্নে বা সাজানো প্রশ্নোত্তর ছাড়া যখন সাধারণ মানুষ একজন ঈমানদার মৃত ব্যক্তিকে ‘তিনি ভালো লোক ছিলেন’ এমন বলাবলি করে, তখন আল্লাহ তাকে সামাজিকভাবে ভালো লোক বলে গণ্য করেন। এর মানে এই নয় যে, মানুষ তার বাইরের রূপ দেখে ভালো বলে দিলো অথচ তার কাছে বান্দার হক রয়ে গেছে। কিংবা আল্লাহর হকও সে অনেক নষ্ট করেছে। ক্ষমালাভ বা ক্ষতিপূরণ করে যায়নি, তখন এ লোকটির ক্ষমা বা শাস্তি তার আমলনামা অনুযায়ীই হওয়ার কথা। মানুষের কথায় বড় কোনো পরিবর্তন হয় না। ভালো লোক সম্পর্কে জনগণ আবারো ‘ভালো ছিলেন’ এমন কথা বলাবলি করলে আলাদা উপকার হয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে অপরাধী ও খারাপ লোক হলে লোকে ভালো বললেও কোনো লাভ হবে না। এসবই স্বাভাবিকভাবে ভালো বলার আলোচনা। জানাজায় সাজানো প্রশ্ন ও উত্তর আসলে কিছুই না। অবশ্য এখানে একটি বিষয় থেকে যায় যে, বাংলাদেশের মানুষ সহনীয় পর্যায়ের ঋণ, পাওনা, অসদাচরণ ইত্যাদি কেউ মারা গেলে এমনিতেই ক্ষমা করে দেয়। তারা চায় না, লোকটি আখেরাতে আযাব পাক। এতে মানুষ মনে করে এই ক্ষমার বিনিময়ে আল্লাহ তাদের কেউ ক্ষমা করতে পারেন। এ কারণেই জানাজায় এসব প্রশ্ন উত্তর করা হয়। যদিও শরীয়তে এমন নিয়ম নেই। আল্লাহ তার বান্দাদের সুধারণা, ভয় ও বাঁচার চিন্তা এমনকি আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার টুকটাক বাহানাও অনেকসময় পছন্দ করেন। যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমাও করে দিতে পারেন। অতএব, বিষয়টি নিজে চিন্তা করে বুঝে নিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন