শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আন্দোলনে উসকানি ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারে গ্রেফতার পাঁচ

অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে তারা : র‌্যাব

বিশেষ সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

উসকানি ও অপপ্রচারের জন্য টেলিগ্রামসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। নাশকতা ও জ্বালাও-পোড়াও করতে উসকানি দেয়া হতো এই গ্রুপগুলো থেকে। এ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গত বৃৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামীবাগের মিতালী স্কুল গলি রোড এলাকায় অভিযান তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ওয়ায়েজ কুরুনী, তাওহীদুল ইসলাম, গাজী সাখাওয়াত ও হাবিবুর রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় দুই লাখ টাকা, ল্যাপটপ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ও বিভিন্ন দেশবিরোধী, নাশকতা ও উসকানিমূলক লিফলেট। গতকাল শুক্রবার কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেল থেকে নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিংয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় যে, অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী, রাষ্ট্রের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন সংবেদনশীল বিষয়ে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত আলামত বিশ্লেষণ এবং জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান যে, বর্তমান রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতিধারাকে বানচাল ও নস্যাৎ করার জন্য রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্ন করতে সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র, সরকারের সম্পদ ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন তারা। তারা অনলাইনে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বাইরে মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেন। বিগত সময়ের বিভিন্ন ইস্যুসহ সাম্প্রতিক সময়ে ‹নিরাপদ সড়ক চাই› আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা নাশকতার অপচেষ্টা করেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত সবাই দীর্ঘদিন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত। অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে তারা সংঘবদ্ধভাবে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিলেন বলে জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন বলে জানান। গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নামে ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করে যেখানে রাষ্ট্রবিরোধী গুজব সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাষ্ট্রের কার্যক্রম নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করে ভার্চুয়াল জগতে প্রচারের ব্যবস্থা করেন থাকেন। এ জাতীয় বিভিন্ন কন্টেন্ট ল্যাপটপে পাওয়া যায়। বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট এডিট করে তৈরি ও প্রচার করে দেশে সা¤প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তারা রাষ্ট্রবিরোধী সাইবার ফোর্স পরিধি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ব্যানারে রিক্রুটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিভিন্ন ঘটনাকে কীভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা যায়, এ সংক্রান্ত নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করা এবং মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করে থাকেন।
র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও তাওহীদুল ইসলামের নামে বিভিন্ন থানায় রাষ্ট্রবিরোধী, নাশকতা, সন্ত্রাসবিরোধী এবং বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার, নাশকতা ও উস্কানিমূলক প্রচারণার কর্মকান্ডে জড়িত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় পাস করেছেন। তারা নিয়মিত জায়গা পরিবর্তন করতেন। তাদের এই কর্মকান্ডের জন্য দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অনেকেই অর্থ জোগান দিতেন। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্বীকার করেছেন যে, তিনি আগে ছাত্রশিবির করতেন। বাকিরা রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা স্বীকার করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন