২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ৮ম দিবসেও সরকারি ছুটির দিনে সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে মেলার অভ্যন্তরে খাবারের দাম অতিরিক্ত রাখার অভিযোগে আগত দর্শনার্থীরা মেলার বাইরের অস্থায়ী খাবার হোটেলে ভিড় করছেন। এদিকে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যে ডিসকাউন্ট না দেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার ৮ম দিনেও স্টল নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেছে বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা। তাই বেশিরভাগ স্টলে পণ্যে পরিপূর্ণ রয়েছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে মেলা অভ্যন্তরের উত্তর পাশে দেখা যায়, ১০টির অধিক বিভিন্ন খাবার হোটেল। এসব হোটেলে পোলাও, বিরিয়ানিরসহ ফাস্টফুড বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম আকাশ ছোঁয়া থাকায় ক্ষোভ জানালেন দর্শনার্থীরা। তাই অনেকেই সাশ্রয়ী মুল্যে খাবার খেতে বাইরের হোটেলগুলোর দারস্থ হয়েছেন। এছাড়াও ঢাকা বাইপাস সড়কের ৪ লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলমান থাকায় ধুলোবালিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। মেলায় আগত দর্শনার্থী পিতলগঞ্জের বাসিন্দা শিক্ষার্থী অন্তি বলেন, অভ্যন্তরীণ খাবার হোটেলগুলোতে রাখা হচ্ছে যা খুশি তাই মুল্য। তাদের খাবার হোটেলের সব খাবারের দাম সাধারণের হাতের নাগালের বাইরে।
গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা গৃহিনী তানজুমা আইজি ইকরা বলেন, মেলার অভ্যন্তরীণ খাবার হোটেলে অতিমূল্য রাখা হচ্ছে। তাছাড়া মেলায় যাতায়াত পথে ভোগান্তি রয়েছে। মেলায় অবস্থানরত মিঠাই নামীয় খাবার হোটেল কর্মকর্তা জুলহাস মিয়া বলেন, স্টল পেতে যেমন খরচ হয়েছে এখানে কর্মচারী বেতনেও ব্যয় হয়েছে। যা মুল্য রাখা হচ্ছে তাতেও মাস শেষে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা ফুড ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম বলেন, মেলায় খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এর অতিরিক্ত রাখলে মেলা কর্তৃপক্ষ দেখবে। আমরা স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ রক্ষায় দেখভাল করছি।
দর্শনার্থীদের দাবি, মেলার পাশে থাকা মহাসড়ক এশিয়ান বাইপাস সড়ক থেকে আসা ধুলায় দর্শনার্থীদের বিপাকে পড়তে হয় তাই পানি ছিটালে ধুলা কিছুটা কমবে বলে তিনি মনে করেন। এছাড়া দেশে গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়লেও মেলায় মাস্ক ব্যবহারে তেমন সচেতনতা দেখা যায়নি। মাস্ক না পড়ার এ বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
মাসব্যাপী মেলায় এবার দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ-সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকা ও শিশুদের ২০ টাকা। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণে যাতায়াতের জন্য ৩৫টি বিআরটিসির বাস চলাচল করছে। যাতে ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা। ইপিবি জানিয়েছে, দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লে বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
এসব বিষয়ে মেলার পরিচালক ও বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচীব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ বছর প্রথমবার জমেছে এ মেলা। এ বছরের যেসব ত্রুটি থাকবে সামনে তা থাকবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন