বিধিনিষেধ ভেঙে ছুটির দিনে বেড়েছে দর্শনার্থী তাই মেলার আশপাশের মহাসড়কে গতকাল শনিবারও দেখা গেছে তীব্র যানজট। সকালে মেলায় প্রবেশের সময় সমস্যা না হলেও বাড়ি ফেরার সময় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় মেলায় আগত দর্শনার্থীদের। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে কয়েদিদের হাতে তৈরি পণ্যের স্টলে উৎসুক দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। তারা স্বল্প মূল্যে ওইসব পণ্য ক্রয় করছেন। আলাপচারিতায় শুনছেন কয়েদি শ্রমজীবীর কথা।
সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিরসনে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কড়াকড়ি থাকলেও মেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ঘুরতে আসা মধুখালী এলাকার গৃহিনী তাহছিনা আক্তার নিশাত বলেন, এবার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) মাসব্যাপী চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর। ঘুরতে গিয়ে দেখলাম কয়েদিদের হাতের তৈরি নানা পণ্য। এসব পণ্যের মাঝে বাঁশ, বেত, কাঠ, পাট আর প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রীই বেশি। অত্যন্ত সুন্দর কারুকাজে সাজানো তাদের প্রতিটি পণ্য। মনে হয়েছে টেকসই। তাই ৪টি আইটেম ক্রয় করেছি।
মেলায় আসা দর্শনার্থী গোয়ালপাড়া এলাকার গৃহিনী তানজুমা আইজি ইকরা বলেন, আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য প্রবেশপথ ছাড়াও তাদের পণ্য প্রদর্শনীর জন্য স্টলে স্টলে মাস্ক ও স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। তবে মেলায় সব ধরনের পণ্যের একাধিক স্টল প্রয়োজন ছিলো। দেখা গেছে একই জাতীয় পণ্যের স্টল একাধিক নেই। ফলে যা খুশি দাম রাখছে। তবে কয়েদিদের তৈরি পণ্যগুলো মানের দিক থেকে টেকসই। কিন্তু স্বল্প দাম। তাই বাড়ির জন্য কিছু পণ্য কিনলাম।
কয়েদিদের হাতে তৈরি পণ্য সংরক্ষণের জন্য মেলায় ঘুরতে আসা বাঙ্গাল বাড়ি নামীয় যাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা মীর আব্দুল আলীম বলেন, বাণিজ্য মেলায় যত স্টল হয়েছে তার মাঝে ব্যতিক্রম কয়েদিদের তৈরি পণ্য। বাংলাদেশ জেল নামীয় স্টল থেকে প্রায় ১০টি ভিন্ন জাতীয় পণ্য ক্রয় করে সংরক্ষণে রেখেছি। যা কমদামে টেকসই বস্তু মনে হচ্ছে।
এদিকে ওমিক্রনসহ করোনা শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে জরিমানার বিধানসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। ওই বিধি বিধান উপেক্ষা করে সরকারি ছুটির দিন গতকাল শনিবার দিনভর ছিলো দর্শনার্থীদের ভিড়। তাই মেলার পাশে থাকা এশিয়ান বাইপাস ও ৩শ’ ফুট সড়কে কাজ চলমান থাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। প্রতি ছুটির দিনেই বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জহিরুল ইসলাম।
এসব বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারা কর্মকর্তা (জেলার) শাহ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, যারা জেলখানায় কয়েদি রয়েছেন, তাদের আলোর মুখ দেখাতে কর্মদক্ষতা দিয়ে তৈরি করা হয়। তারা যেন শাস্তি শেষে বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ জেল নামে সরকারি সংস্থা কয়েদিদের মাধ্যমে বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ করাচ্ছেন। এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন