বিধিনিষেধ ভেঙে ছুটির দিনে বেড়েছে দর্শনার্থী। তাই মেলার আশপাশে মহাসড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। সকালে মেলায় প্রবেশের সময় সমস্যা না হলেও বাড়ি ফেরার সময় চরম ভোগান্তি পোহালেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।
সূত্র জানায়, করোনাকালীন সরকারি নির্দেশে গাড়িতে অর্ধেক যাত্রীর কথা বাদ দিয়ে যতসিট তত যাত্রী ঘোষণার পরপরই বেড়েছে দর্শনার্থী। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিরসনে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কড়াকড়ি আয়োজন থাকলেও মেলায় তা মানাতে দেখা যায়নি।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসরের শুরু থেকেই মেলায় ছুটির দিনে বাড়তি চাপ দেখা গেছে। সম্প্রতি নির্দেশনায় ওমিক্রন ও করোনা পরিস্থিতিতেও জনসচেতনতা দেখা যায়নি। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের দাবি, এতোদিন জমাজমাট বেচাকেনা চললেও করোনা পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় সরকার জরুরি বিধিনিষেধ আরোপ করায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন তারা। এদিকে মেলার আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য প্রবেশ পথ ছাড়াও তাদের পণ্য প্রদর্শনীর জন্য স্টলে স্টলে রাখা হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজর। নিরাপদ দূরত্ব রেখে, মাস্ক ব্যবহার করে মেলায় প্রবেশের জন্য মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত নতুন বিধি-নিষেধের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, গত বছর বন্ধ থাকার পর এবার আশা নিয়ে মেলা শুরু হয়েছিলো। কিন্তু আবার করোনার ধাক্কা আসছে। ফলে মেলা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। এমনকী অবিক্রীত থেকে যেতে পারে মালামাল। তবে ছুটির দিনগুলো আশার আলো জোগাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউপি সদস্য রিটন প্রধান জানান, প্রজ্ঞাপনে ওমিক্রনসহ করোনা শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে জরিমানার বিধানসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। ওই বিধি-বিধানের জন্যই প্রথমদিন দর্শনার্থী কিছুটা কম হলেও ছুটির দিনে পর্যাপ্ত লোক সমাগম হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলায় পাশে থাকা এশিয়ান বাইপাস ও ৩শ’ ফুট সড়কে কাজ চলমান থাকায় তীব্র যানজট। কাঞ্চন সেতুর টোল এলাকায় সৃষ্ট যানজট এশিয়ান বাইপাসের উলুখোলা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি ছুটির দিনেই বিকাল ৫টা থেকে রাত পর্যন্ত এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এসব বিষয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি আই) জহিরুল ইসলাম জানান, আমাদের ট্রাফিক বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত জনবল পুলিশ সদস্য ছাড়াও মেলায় দায়িত্বরত সদস্যরা বিশেষ টিম হয়ে কাজ করছেন। তবু এশিয়ান বাইপাস সড়কে নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় সরকারি ছুটির দিনে জটিল হচ্ছে পরিবহন পরিবেশ।
এ বিষয়ে ইপিবির সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে ছুটির দিনে দর্শনার্থী বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কিছুটা হিমসিম খেতে হয়। এ সময় দর্শনার্থী, ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুরোধ করেছেন তিনি। মেলার ব্যবসায়ীদের দাবি, স্টল পেতে বরাদ্দ বাজেট, সাজসজ্জা ও কর্মচারী বেতনসহ বড় অংকের খরচ হয়ে গেছে। তাই লোকসান গুনে ভাগ্যের উপর নির্ভর করবেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন