শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারয়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউকের অধীনে হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর। মেলার ২২তম দিনে গতকাল শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেখা যায়, সরকারি ছুটির দিনে উপচেপড়া ভিড়। এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ১১ দফা স্বাস্থ্যবিধি জারির পর কোথাও দেখা যায়নি স্বাস্থ্যবিধি মানার পরিবেশ। যদিও মেলা কর্তৃপক্ষ মাস্ক পড়াতে বাধ্য করতে কঠোর ভূমিকা নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে মেলা অভ্যন্তরে ভাসমান খাবার বিক্রেতা ও কতিপয় স্টলে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করতে দেখায় হতাশা প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। মেলার ব্যবসায়ীদের দাবি, খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কেহই মেলার শুরুর দিন থেকে কোনো খবর নেননি খাবার হোটেলগুলোর। এতে একদিকে স্টলে স্টলে নিম্নমানের খাবার আর সুযোগ বুঝে ভাসমান খাবার বিক্রেতারাও খাবার বিক্রি করছে।

গতকাল শনিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন ছাড়াও অস্থায়ী স্টলে বসেছে বিভিন্ন নামীয় কোম্পানীর উৎপাদিত পণ্য। এদের মাঝে নিম্ন্নমানের পণ্য বিক্রির দৃশ্যও চোখে পড়ে দর্শনার্থীদের। তবে মেলায় ক্রেতা আকর্ষণ বাড়াতে যুমনা, আরএফএল, ওয়ালটনসহ বিভিন্ন কোম্পানী ইতোমধ্যে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছেন। অনেকে তাদের পণ্য বিক্রি বাড়াতে হোম ডেলিভারি সার্ভিস ফ্রি ঘোষণা করায় আগের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট স্টল পরিচালকদের।

এদিকে মেলা অভ্যন্তরে পেয়ারা ও আনারসের আচার বিক্রি করতে দেখা গেছে হুমাউন, কাউছার, ও খোকন নামের বেশ কয়েকজন ভাসমান খোলা খাবার বিক্রেতাকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরিব মানুষ তাই ভেতরে টিকেট কেটে প্রবেশ করেই বিক্রি করছি। ভেতরের অন্যান্য খাবারের দাম বেশি থাকায় আমাদের কাছ থেকে অল্প দামে কিনে খাচ্ছে। এ বিষয়ে কেউ তাদের বাধা দেয়নি বলে দাবি করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ব্যতিত কোনো লোকজন খাবারের মান ও ভেজাল প্রতিরোধে মেলায় অভিযান বা খোঁজ খবর নেননি। ফলে যে যার মতো নিম্নমানের খাবার বিক্রি এমনকি ভাসমান খোলা খাবার বিক্রেতারাও দেদারছে তাদের অস্থাস্থ্যকর খাবার বিক্রি করে যাচ্ছে।

মেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, আমি একাই পুরো উপজেলার বিভিন্ন খাবার হোটেল ও অন্যান্য বিষয় দেখভাল করি। মেলায় আমাকে কেউ লিখিত দায়িত্ব দেয়নি। তবে যেহেতু আমার দায়িত্বের এলাকায়। সেহেতু মেলা অভ্যন্তরে আমি না গেলেও আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকজন দেখাশুনা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডাক্তার নূর জাহান আরা খাতুন জানান, মেলার অভ্যন্তরে আগত দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে একাধিক টিম। এদের মাঝে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত প্রতিদিন একজন করে ডাক্তার, নার্স ও সহযোগী রয়েছেন। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে খাদ্য ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের নিয়ে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছি। অনেককেই সতর্ক করেছি। তবে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।

মেলায় ঘুরতে আসা পিতলগঞ্জের বাসিন্দা জুলহাস মিয়া জানান, আন্তর্জাতিক মানের একটি মেলায় বাইরের মতো খোলা খাবার বিক্রি হচ্ছে তা মেনে নিতে পারছিনা। আবার ভেতরের খাবারের মানও খুব একটা ভালো না। বর্তমান করোনা ও ওমিক্রন পরিস্থিতিতে এমন নিম্নমানের ব্যবস্থাপনায় হতাশা প্রকাশ করা ছাড়া উপায় নাই।

মেলায় ঘুরতে আসা রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা সুমা আক্তার বলেন, বাহিরে যে বার্গার উন্নতমানের স্বত্ত্বেও দাম মাত্র ৮০ থেকে ১৫০ টাকা। মেলায় সেটার দাম রাখা হচ্ছে ২শ’ থেকে ২৮০ টাকা। এভাবে মূল্য নিলে সাধারণ দর্শনার্থীরা একদিনের বেশি মেলায় আসতে চাইবেন না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন