পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর। এ আসরকে ঘিরে আশপাশের সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত পরিবহনে চলছে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য। ভুলতার গোলাকান্দাইল মোড় থেকে মীরের বাজার কিংবা কাঞ্চন সেতু এলাকা থেকে কুড়িল উভয় সড়কে চলাচলরত সব ধরনের যানবাহন ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাড়া আদায় করছে দ্বিগুণ থেকে ৩ গুণ পর্যন্ত। আবার রাত হলে যাত্রীদের ভাড়া নিয়ে জিম্মি করার রয়েছে অভিযোগ।
কাঞ্চন পৌর এলাকার বাসিন্দা পিয়াল হাসান ফয়সাল বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ১১টি বিধিনিষেধ যেন কেবলই নির্দেশনা। রূপগঞ্জের কোথাও এ নির্দেশনা মানতে দেখা যায়নি। এমনকি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়ও বিধি ভেঙে বেড়েছে দর্শনার্থীর ভিড়। আর ওই দর্শনার্থীদের কাছ থেকে সব ধরনের পরিবহনে নেয়া হচ্ছে যা খুশি তা ভাড়া।
কেন্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুব আলম বলেন, স্থায়ী প্যাভিলিয়ন দেখতে আমাদের এলাকার লোকজন ছাড়াও বাইরের জেলার লোকজন আসছেন। আবার আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যাতায়াত করতে হয়। তবে সড়কে সব ধরনের যানবাহনে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাণিজ্য মেলা শুরুর আগে এশিয়ান হাইওয়ের গোলাকান্দাইল মোড় থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া নেয়া হতো ৩০ টাকা। আর মেলা শুরু হওয়ার পর নেয়া হচ্ছে যাত্রীপ্রতি ১০০ টাকা। এভাবে বিআরটিসি বাসের ভাড়া এতোদিন নেয়া হতো ২০ টাকা এখন ৪০ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মেলার পাশে থাকা এশিয়ান বাইপাস সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ কাজ শুরু হওয়ায় ধুলোবালিতে নাকাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবার রয়েছে তীব্র যানজট।
ভুলতা গোলাকান্দাইল এলাকায় নিয়মিত যাতায়াতকারী হিরা নাইম বলেন, মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী হয় তাই সুযোগ বুঝে স্থানীয় সিএনজি চালকরা মনমতো ভাড়া আদায় করছে। গাউছিয়া থেকে কাঞ্চন সেতুতে দিনের বেলায়ও নেয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
মেলায় ঘুরতে আসা যাত্রী সুশীল সরকার বলেন, স্টলে স্টলে মাস্ক ও স্যানিটাইজর রাখা হয়েছে। কিন্তু টিকেট পেতে দীর্ঘ লাইনে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়াও যাতায়াত পথে সিএনজিগুলো তাদের মনমতো ভাড়া আদায় করছে। এসময় তিনি বলেন, একাধিক প্রবেশ পথ থাকলে এমনটা হতো না। আর ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে বিধিবিধান উপেক্ষা করে সরকারি ছুটি ছাড়াও মেলার ১৭তম দিন গতকাল সোমবার ছিলো দর্শনার্থীদের ভিড়। রাজধানী থেকে আসা দর্শনার্থীরা বিআরটিসি সুবিধা পাওয়ায় ওই এলাকার যাত্রীদের ভাড়া নিয়ে ছিলো না অভিযোগ। তবে সড়কে ধুলোবালি থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। রামপুরা এলাকা থেকে মেলায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী সারোয়ার হোসেন বলেন, মেলা কর্তৃপক্ষের দেয়া বিআরটিসি বাসের ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে আছে। তবে সিএনজি চালকরা সিন্ডিকেট করে ভাড়া আদায় করছে।
ইছাখালী এলাকার গৃহিনী রোকসানা বলেন, সরকারি ছুটির দিনে প্রচুর দর্শনার্থী হওয়ায় চাপ থাকে বেশি। এ সুযোগে সিএনজি চালকরা মহিলা ও শিশু দেখলে তাদের মনমতো ভাড়া দাবি করে। রাস্তায় গাড়ি না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে মেলায় গিয়েছি। কাঞ্চন এলাকার সিএনজি চালক রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কে চলতে হলে ট্রাফিক পুলিশের নামে লাইনম্যানকে টাকা দিতে হয়। এতে অতিরিক্ত খরচ হয় আর ওই খরচ তুলতে যাত্রীদের কাছ থেকে কিছুটা বেশি আদায় করতে বাধ্য হচ্ছি।
তবে কাঞ্চন টোল এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জহিরুল ইসলাম বলেন, ট্রাফিকের কোন সদস্য কোন পরিবহন থেকে টাকা নেয় না। বরং বাণিজ্যমেলার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন