ফরিদপুরে আল-মদিনা নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রুপা আক্তার নামে এক প্রসূতি নারীকে প্রশিক্ষণবিহীন এক নার্স সিজার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় নবজাতকের মাথাসহ শরীরের কয়েক জায়গায় কেটে ফেলে সে। ওই প্রসূতি মায়ের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ এলাকায়।
গতকাল শনিবার সকালে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হাসপাতালটিতে গর্ভবতী মায়ের সিজার করার সময় নবজাতকের মাথার কয়েক জায়গায় কেটে ফেলে ওই নার্স। নার্সের নাম চায়না বেগম। পরে সদ্য ভ‚মিষ্ট নবজাতকের মাথায় ৯টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তবে নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। পরে নবজাতকসহ মাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও এর আগে ৫০ থেকে ১০০ গর্ভবতী নারীর সিজার ও ডেলিভারি করান ওই নার্স। তবে হাসপাতালটির নার্স চায়না বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা বললেও স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কোনো প্রশিক্ষণের সনদ দেখাতে পারেননি। একজন নার্স কোনো প্রসূতি মায়ের সিজার করতে পারেন কি না এ নিয়ে ফরিদপুরে আলোচনার ঝড় বইছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্বাভাবিক ডেলিভারি হতে পারতো। তবে ওটি চার্জ পাওয়ার লোভে গর্ভবতী মাকে সিজার করার জন্য তড়িঘড়ি করে ওই নার্স। কিন্তু ওটি চার্জ হাতছাড়া হওয়ার লোভে সে দ্রæত ওটিতে ঢুকায় সিজার করার জন্য। কিন্তু আমরা জানতাম ডাক্তার সিজার করবে। তবে ওই নার্স যে সিজার করবে তা জানা ছিলো না। আমরা ওই নার্স ও হাসপাতাল মালিকের বিচার চাই।
পরে খবর পেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুল আলম, জেলা স্বাচিবের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আব্দুল জলিল।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ হাসপাতালে এ রকম অনিয়ম হয় তা জানা ছিলো না। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনার পর ওই হাসপাতালটির মালিক পলাশ মোল্যা ও প্রসূতি মাকে সিজার করার অভিযোগ ওঠা চায়না বেগম নামে ওই নার্সকে আটক করে পুলিশ।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিল বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালটির মালিক পলাশ ও নার্স চায়নাকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরে সিভিল সার্জন অফিসের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে শাতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল। কেউ মানছে না সরকারি কোন নিয়ম কানুন। সিভিল সার্জনের প্রধান অফিস সহকারী মো. জালাল বলেন, মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলেও বেশরম কিছু হাসপাতাল মালিক আছেন তারা কিছুই মনে করেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন