শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভিসি বিদায়ে শান্ত হবে শাবি, আমরণে অনশনের ১৭ ঘন্টা !

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৫২ এএম

দাবী এখন একটাই উপচার্যের পদত্যাগ। সেই দাবী আদায়ে আমরণ অনশনে বসেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে পার হয়েছে প্রায় ১৭ ঘন্টা। ক্ষুধার তীব্র জ¦ালা যেন তুচ্ছ হয়ে গেছে ভিসি বিদায়ের তৃঞ্চায়। পদত্যাগের দাবীতে তারা কতটা অনড়, তারাই প্রমাণ বহন করছে আমরণ অনশনের দৃশ্য। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবীতে এখনও টনক নড়েনি ভিসির। পদত্যাগ বা ঘটনা সমাধানের কোন দৃশ্যমান আলামত মিলেনি এখনো। তবে ভিসি বিদায়েই একমাত্র সমাধান, এমন অভিমত আন্দোলনকারীদের। এর বিকল্প কোন পথ নেই। ভিসি পদত্যাগের দাবীতে আমরণ অনশনে দীর্ঘ ১৭ ঘন্টা পার করছেন ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা। মাথার উপর শীতের কুয়াশা, বাতাসে প্রচন্ড কাঁপুনি, পেঠে ক্ষুধার তীব্রতা। কুয়াশা নিবারণে সামিয়ানা টানানো হয়েছে, কাঁপুনি রোধে গায়ে লেপ বা কম্বল। কিন্তু পেঠের ক্ষুধায় খাবার নয়, ভিসির বিদায়ে যেন শান্ত হবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা । এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। সমাধানকল্পে শাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এসেছিলেন অনশনকারী শিক্ষার্থীদের বোঝাতে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কর্ণপাত করেননি আন্দোলনকারীরা। স্লোগান বদলে এখন একটি স্লোগান দিচ্ছেন তারা। ইয়েস অর নো! ইয়েস অর নো। মূলত এ শ্লোগানের মাধ্যমে ভিসিকে গদি ছাড়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এদিকে মূল গেইট থেকে বেশ ভেতরে ভিসির বাসভবন। সেই মূল গেইট থেকে শিক্ষকদের জন্য আসা মাইকসহ রিকশা ফেরত পাঠিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা শিক্ষকদের কথা শুনতে রাজি নন। সময় বাড়ার সাথে ভিসি পদত্যাগ আন্দোলন আরো তীব্র হচ্ছে। ভিসির বাসভবনের সামনে বেড়ে গেছে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও।
সূত্র মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘অযৌক্তিক’ কিছু সিদ্ধান্তে আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। করোনায় দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর গত বছরের ২ নভেম্বর ক্লাস শুরু হয়। এর আগে পাঁচটি হলও খুলে দেওয়া হয়েছিল। ক্যাম্পাস খোলার পর কর্তৃপক্ষের কিছু সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। পরে ছাত্রীদের তিন দফা দাবির আন্দোলনে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরে পুলিশের হামলায় সেই ক্ষোভ লাভ করে অগ্নিরূপে । মূলত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীরা হলে থাকার সুযোগ পান। এর আগে কেউ চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের দুটি হলের অধীনে ভাড়ায় নেওয়া চারটি বহুতল মেসে ব্যক্তিগত খরচে থাকতে পারেন। ওই মেসে থাকতে ছাত্রীদের প্রচুর ব্যয় হয়। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এসব মেসে ছাত্রীরা থাকেননি; কিন্তু এরপরও পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হয় ছাত্রীদের। যদিও বাকি পড়া ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্রীদের অভিযোগ, প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা তাঁর অধীনে থাকা দুটো মেসের জমে থাকা টাকা এককালীন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন ছাত্রীদের। এতে একেকজন শিক্ষার্থীকে পরিশোধ করতে হয়েছে কমবেশি ২০ হাজার টাকা । এ ছাড়া সিরাজুন্নেসা হলে ইন্টারনেটের ধীরগতি, খাওয়ার পানি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংকটসহ নানা ধরনের সমস্যায় ছিল জর্জরিত। এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন ছাত্রীরা। গত ২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা ১৫ থেকে ২০টি টংদোকান চালুর অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীদের খাবারের সমস্যা হচ্ছিল। বারবার অভিযোগ করেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর সমাধানে তাৎক্ষণিক কোনো উদ্যোগ নেয়নি। যদিও প্রশাসন বারবার শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেছে, দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সুবিধাসংবলিত ফুডকোর্ট জোন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এমন আশ^াস কেবল, র্দীঘতর হয়েছে দীর্ঘশ্বাস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন