চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন গত কিছু দিন ধরে বাংলাদেশে একের পর এক নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এতে সর্বশেষ যুক্ত হলো, ভোটে জেতার নয় দিন পর সাধারণ সম্পদাক জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল এবং আদালতে আবার সেই প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিতের ঘটনা।
নির্বাচন কমিশন জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও আপিল বোর্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পরবর্তীতে নিপুণ আকতারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে। সর্বশেষ শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের দেয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট।
অন্যদিকে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করতে যাচ্ছেন নিপুণ। শুরু থেকেই শিল্পী সমিতির নির্বাচন সাধারণ নির্বাচনের ন্যায় উত্তাপ ছড়িয়ে আসছে। মাত্র কয়েকশো সদস্যের নির্বাচনে একের পর এক নাটকীয়তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে একের পর এক নাটকীয়তা নিয়ে ফেসুবকে একজন মজা করে লিখেছেন, ‘‘প্রথম দিন শুনলাম কারচুপি করা ভোটে জায়েদ খান পাশ। গতকাল দেখি আপিলে নিপুন পাশ করে গলায় মালা পরে বসে আছে।আজকে ঘুম থেকে উঠে দেখি কোর্টের রায়ে আবার জায়েদ খান পাশ। কালকে হয়তো শুনব ..র হস্তক্ষেপে নিপুন পাশ। বাবারে তোরা ভাগজোগ করে সমিতি চালা। শনি রবি সোম জায়েদ খান, মঙ্গল বুধ বৃহস্পতি নিপুন। আর শুক্রবার সহ সকল ছুটির দিন হিরো আলম সাধারন সম্পাদক। অনেক দিন পর বাংলা ছবি দেখে মজা পাচ্ছি তাও আবার বিনা টিকেটে।’’
আরেকজন লিখেছেন, ‘‘সিনেমা দেখি না, কিন্তু এফডিসি নির্বাচন নিয়ে অভিনয় শিল্পীরা দারুণ অভিনয় করছে,আমরা দর্শক সেটা ভালই উপভোগ করছি, চালিয়ে যাও। গত বিশ বছরে বাংলাদেশের জনগণ যতটা না বাংলাদেশে নির্মিত কোনো চলচিত্র নিয়ে উৎসুক কিংবা বিনোদন পেয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশি এদের নির্বাচনে পাচ্ছেন।’’
দেশে নির্বাচনের বেহাল দশা নিয়ে একজন লিখেছেন, ‘‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সকল কলাকুশলীকে।কারণ তারা সিনেমা বানিয়ে কোন চমকপ্রদ করতে পারেনা অন্তত জঘন্য একটা নির্বাচন দিয়ে জাতিকে আনন্দ দিচ্ছে তারা। ইহাতে আরো বড় ভাবে প্রমাণিত হল যে বাংলাদেশের যেখানেই নির্বাচনের ব্যবস্থা আছে সবই আস্তাকুরে চলে গেছে।বস্তির টুকাই থেকে শুরু করে সংসদ পর্যন্ত প্রত্যেকে নির্বাচন শব্দটিকে বিতর্কের পথে গেছে।’’
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক হন জায়েদ খান। তবে এর পরপরই ফলাফল না মেনে প্রথমে এই ভোটের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন নিপুণ। তাতেও ফলাফল পরিবর্তন হয়নি। পরে আপিল বোর্ডে অভিযোগ করলে শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। আর সাধারণ সম্পাদকের পদে জয় পান নিপুণ। পাশাপাশি সদস্য পদে জয় পাওয়া চুন্নুর প্রার্থিতাও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
তবে আপিল বোর্ডর এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। এর প্রাথমিক শুনানি শেষে এদিন দুপুরে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে এবার আপিল করবেন নিপুণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন