জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০-এ আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন দেশের বরেণ্য দুই অভিনয়শিল্পী আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদ। গত মঙ্গলবার তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের (চলচ্চিত্র-১) এক প্রজ্ঞাপনে ২০২০ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের চলচ্চিত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের অংশ হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর দুজন গুণী অভিনয়শিল্পীকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। একাধারে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী আনোয়ারা বেগমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। ১৯৬১ সালে মাত্র ১৪-১৫ বছর বয়সে অভিনেতা আজিমের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র আসেন। তিনি পরিচালক ফজলুল হকের ‘আজা’ চলচ্চিত্রে প্রথম নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। পরে ছবির নাম পাল্টে রাখা হয় ‘উত্তরণ’। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হানের ‘সঙ্গম’ চলচ্চিত্র প্রথম সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। পরের বছর ‘জানাজানি’ চলচ্চিত্রে শওকত আকবরের বিপরীতে অভিনয় করেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বালা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ভাবি, চাচি, শাশুড়ি ও মায়ের চরিত্রেই বেশি সাফল্য পান । দীর্ঘ ৫০ বছরের অভিনয়জীবনে সাড়ে ছয়শ’র বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। রাইসুল ইসলাম আসাদ একাধারে বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র শিল্পী। তার জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৫ জুন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ছিলেন ক্র্যাক প্লাটুনের একজন সদস্য। রাইসুল ইসলাম আসাদের প্রথম চলচ্চিত্র খান আতা পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’। ১৯৭৩ সালে সিনেমাটি মুক্তি পায়। এরপর আরও অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ঘুড্ডি সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। তানভীর মোকাম্মেলের লালন (২০০৪) চলচ্চিত্রে তিনি লালন চরিত্রে এবং গৌতম ঘোষের মনের মানুষ (২০১০) চলচ্চিত্রে লালনের গুরু সিরাজ সাঁই চরিত্রে অভিনয় করেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষের পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৯৩) চলচ্চিত্রে তার কুবের চরিত্রে অভিনয় করেন। টেলিভিশনে অসংখ্য নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন এবং এখনো করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন