শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

বাংলাদেশ আছে আগের মতোই, মুমিনুলও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

অপ্রত্যাশিত কোনো সাফল্য অনেক সময় বাড়িয়ে দেয় প্রত্যাশার পরিধি। অভাবনীয় কোনো জয় বাড়িয়ে দেয় স্বপ্নের সীমানা। নিউজিল্যান্ড সফরে একটি টেস্ট জয়ের পর যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়েও আশার পারদ ছিল উঁচুতে। কিন্তু এবার বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়ল বাজেভাবে। ব্যর্থ সিরিজের পর অধিনায়ক মুমিনুল হক বলছেন, টেস্ট ক্রিকেটে দল আছে আগের জায়গাতেই।
এই বছরের আগে নিউজিল্যান্ডে কিউইদের বিপক্ষে কোনো সংস্করণেই কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সেখানেই ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে জয় পায় সবচেয়ে কঠিন সংস্করণে। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে মুমিনুল হকরা হারিয়ে দেন আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও অতীতের বাস্তবতা ছিল একই। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সেখানে কোনো সংস্করণেই ছিল না জয়। এবারের সফরে শুধু একটি জয় নয়, ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। এরপর টেস্ট সিরিজ নিয়ে আশা বেড়ে যায় আরও। বিশেষ করে, একাগাদা ক্রিকেটার আইপিএলে চলে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা পায়নি তাদের প্রথম পছন্দের টেস্ট একাদশের ৫-৬ জনকে।
কিন্তু সিরিজ শেষে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাক আকাশ-পাতাল। দুই টেস্টেই বাংলাদেশ হেরে যায় বিশাল ব্যবধানে। দুই টেস্টেই চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং বিধ্বস্ত হয় দৃষ্টিকটুভাবে। ২০০৭ সালের পর প্রথমবার টানা দুই টেস্টে একশর নিচে স্কোরে গুটিয়ে যায় দল। মুমিনুল অবশ্য এরকম পারফরম্যান্সে অবাক নন বলেই মনে হলো। সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, বাস্তবতার প্রতিফলনই পড়েছে সিরিজে, ‘টেস্ট এমন একটা খেলা, যেখানে দল হিসেবে প্রতিটি দিনই উন্নতি করতে হবে। এক সেশন ভালো খেললে হবে না, অথবা ৫ দিনের ৩ দিন ভালো খেললে হবে না। ৫ দিনের ৫ দিনই ভালো খেলতে হবে। এক সেশন কিংবা দুইটা সেশনে ভুল করতে পারেন, ৫ দিনের ভেতরে বেশির ভাগ সেশনেই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। আপনারা এমনভাবে বলছেন, আমরা একটা টেস্ট জিতে (নিউজিল্যান্ডে) বিশ্বের সেরা দল হয়ে গেছি। আমার মনে হয়, আমরা টেস্ট ম্যাচ জেতার আগে যে জায়গায় ছিলাম, এখনও ওই জায়গাতে আছি। হয়তো আপনাদের প্রত্যাশা বেড়েছে, আমাদের নিজেদেরও বেড়েছে। আমার মনে হয়, আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে। অনেক জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’
দলের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই, নিজের ফর্মও তথৈবচ। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বলা যায় দুঃস্বপ্নের মতোই কাটল মুমিনুলেরও। নিজে যদিও দাবি করছেন, তিনি ভালো জায়গায়ই আছেন। নিজের ব্যাটিংয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছুও খুঁজে পাচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টে মুমিনুলের স্কোর ০, ২, ৬ ও ৫। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দলের স্মরণীয় জয়ের ম্যাচে করেছিলেন ৮৮ ও অপরাজিত ১৩। তবে এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে দেশের মাঠে তার স্কোর ছিল ৬, ০, ১, ও ৭।
সব মিলিয়ে গত নভেম্বর থেকে ১২ টেস্ট ইনিংসের ৯টিতেই তিনি ছুঁতে পারেননি দু অঙ্ক। যে কোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট এমন ফর্ম। অধিনায়ক হলে তো সেই ভাঁজ সহজে সরার কথা নয়। নিজের পারফরম্যান্স ভালো না হলে যে সতীর্থদেরও উজ্জীবিত করা কঠিন! মুমিনুলের মনের ভেতর সেই ভাবনা আছে কিনা, বলা কঠিন। তবে মুখে অন্তত দুর্ভাবনার প্রকাশ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক বললেন, রান করার পথ তার জানা, ‘দু-একটি ম্যাচ খারাপ গেছে, তার মানে এই নয় যে আমি আমার জায়গায় নেই। আমি সবসময় আমার জায়গায় আছি। দু-একটা ইনিংসে রান হয়নি, আবারও বলব, ওটা নিয়ে আমি খুব বেশি উদ্বিগ্ন নই। আমি জানি, কীভাবে রান করতে হয়। আমি আগেও এরকম ছিলাম, আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন