ইন্দোনেশিয়া সরকার পাম অয়েল রফতানি বন্ধ ঘোষণার পর দেশের বাজারে ভোজ্যতেলে দাম বেড়ে গেছে। যদিও দাম বাড়ার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, একদিনের ব্যবধানে সয়াবিনের দাম প্রতি লিটারে ২০ টাকা এবং পাম অয়েলে ২৫ টাকা বেড়েছে। কমে গেছে সয়াবিন তেলের সরবরাহ।
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। ফলে মিল মালিকরা আবারও ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু সরকার এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলছে-ঈদের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে ঈদ সামনে রেখে ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়ায় বাজারে এখন সয়াবিনের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। মিল মালিকরা সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন। তবে মিল মালিকরা বলছেন তারা চাহিদা অনুযায়ী তেলের জোগান দিয়ে যাচ্ছেন। সরবরাহ কমানো হয়নি।
ইন্দোনেশিয়া নিজেদের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে ও জোগান বাড়াতে শনিবার পাম অয়েল রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এ সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে। এখন যেসব তেল রফতানির জন্য জাহাজীকরণের পাইপলাইনে রয়েছে, সেগুলো রফতানি করা যাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এরপর থেকে আর তেল রফতানি করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া থেকে যেসব পাম অয়েল আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে যেসব এলসির অর্থ পরিশোধ করা তা দেশে আনার জন্য ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ করছেন। তবে এখন আর নতুন এলসি খোলা হচ্ছে না। একই সঙ্গে নতুন করে এলসির অর্থ পরিশোধও বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী পাম অয়েলের ৩৯ শতাংশই রফতানি করে ইন্দোনেশিয়া। মালয়েশিয়া করে ২৭ শতাংশ। বাকি পাম অয়েল রফতানি করে অন্যান্য দেশ। তবে মালয়েশিয়া এখনো পাম অয়েল রফতানি বন্ধ করেনি। দুটি দেশই পাম অয়েল উৎপাদন সোয়া ৫ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া উৎপাদন করবে ৪ কোটি ৭১ লাখ টন এবং মালয়েশিয়া করবে ১ কোটি ৮৯ লাখ টন।
ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি বন্ধ করার ঘোষণার পর একদিনের ব্যবধানে রোববার দেশের বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার নির্ধারিত মূল্য হচ্ছে ১৩৬ টাকা। কোথাও এই দরে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়তি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও করে ফেলেছেন। তারা মনে করছেন একদিনে আটকে রাখতে পারলেই দাম বেশি পাওয়া যাবে।
অন্যদিকে সরকার প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু ওই দামে বাজারে পাম অয়েল পাওয়া যায়নি। এক মাস আগে ছিল ১৪০ টাকা লিটার। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ টাকা। দুই দিন আগে ছিল ১৬০ টাকা। রোববার বাজারে প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন