প্রশ্ন : আমি প্রেগনেন্ট হয়ে গেছি বলে আমার বয়ফ্রেন্ডকে জানাই এবং বিয়ের জন্য রাজি করি। পরে অবশ্য মিসক্যারেজ হয়ে গেছে বলে পার পাই। আমাদের বিয়ে কি বৈধ হবে? যদি গোনাহ্ হয়ে থাকে তাহলে এখন কি করব? বর্তমানে আমাদের বিবাহ জীবন ভালো যাচ্ছে তবে আমি মনে মনে অত্যন্ত লজ্জিত। কি করতে পারি?
উত্তর : মুসলমান হিসাবে প্রকৃত বিশ্বাস শিক্ষা ও সংস্কৃতি আয়ত্ব করতে না পারায় আপনি আপনার জীবনকে অনেক এলোমেলো করে ফেলেছেন। ধর্মহীন সমাজে এসব চলে। কিন্তু ইসলামী সমাজে এসবই অন্যায়। প্রথমে আপনি অবৈধ মেলামেশায় গিয়েছেন, প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা তৈরি করেছেন। এরপর নিঃসন্দেহে প্রেম নামক একটি কামনা বাসনামূলক অবৈধ সম্পর্ককে বৈধ রূপ দেওয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। বলতে গেলে আপনার সঙ্গীকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। এখানে আপনি ও আপনার পুরুষ সঙ্গী একই অপরাধে অপরাধী। গোনাহর কোনো সীমা নেই। তবে এমন গোনাহ বা এরচেয়ে হাজারগুণ বেশি গোনাহও আল্লাহ মাফ করতে পারেন। আপনারা তওবা, ক্ষমা প্রার্থনা ও নেক আমল করতে থাকুন। তবে শরীয়তের সকল শর্ত পূরণ করে বিয়ে করে থাকলে, আপনার বিবাহ সম্পূর্ণ সঠিক হয়েছে। বৈধ হয়েছে। এ বিষয়ে মনে কোনো সংশয় রাখবেন না। মনে মনে অপরাধবোধ ও লজ্জা হওয়াই স্বাভাবিক, এ বিষয়টি লালন করে নিজেদের জীবনকে দূর্বিসহ করে তুলবেন না। স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন। তবে আল্লাহর সামনে অপরাধবোধ, লজ্জা, অনুতাপ, অনুশোচনা আমৃত্যু লালন করে যাবেন। এতে আপনার ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক উপকার হবে। পরকালেও নাজাতের ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন : আমার বোনের জামাই ব্যবসার জন্য আমাকে টাকা ধার দেন, সেই টাকা আমি শোধ করে দেই। কিন্তু উনি আজ অবধি আমার বোনকে বিভিন্নভাবে ওই টাকার খোঁটা দেন, আমার বোনের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছেন, কি ব্যবস্থা নিতে পারি?
উত্তর : আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। শত কষ্ট হলেও তাকে ক্ষমা করতে থাকুন। আপনার বোনকেও বোঝান। তাকে কষ্ট সহ্য করতে সাহস যোগান। ধৈর্য ধরার উপদেশ দিতে থাকুন। আপনাদের অনেক সওয়াব হবে। জীবনের বহু গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভ করবেন। যিনি উপকার করে পরে খোঁটা দেন, তিনি ইসলামী জীবন বোধের সাথে পরিচিত নন। এটা তার জ্ঞান ও সংস্কৃতির অভাব। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘প্রকৃত মুমিন তারা, যারা মানুষকে উপকারের পর আর খোঁটা দেয় না।’ অন্য আয়াতে আছে, ‘উপকার করে খোঁটা দিলে উপকারের সওয়াব নষ্ট হয়ে যায়।’ হাদিস শরিফে মহানবী সা. বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট অপছন্দনীয় লোকেদের মধ্যে উপকার করে খোঁটা দানকারীও একজন।’ আপনার বোনজামাইকে শান্তভাবে কেউ বোঝাবার চেষ্টা করুক, সম্ভব হলে তিনি আল্লাহ ওয়ালা আলেম ও পীর-মাশায়েখদের সান্নিধ্যে আসা যাওয়া করুক, এতে তার মধ্যে ইসলামী জ্ঞান সংস্কৃতি ও চরিত্র এসে যাবে। সর্বোপরি আপনারা তার মনের পরিবর্তনের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে মন লাগিয়ে দোয়া করুন। পরিবর্তন অবশ্যই আসবে। কেননা, আল্লাহর নবী বলেছেন, দোয়া হলো ঈমানদারের অঙ্গ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন