প্রশ্ন : আমি বিয়ে করেছি আজ দুবছর, বিয়ে আমার সম্মতিতেই হয়েছে এবং আমাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে ওর সাথে আমার বনিবনা হচ্ছে না, ও আমার কোন কথা শুনেনা এমন কি নামাজ পড়ার কথা বলেছি সেটাও শুনেনি, ওর সাথে আর কখনো বনিবনা হবে বলে মনে হয়না । আমি ওকে তালাক দিতে চাই, এতে আমার কোন গুনাহ হবে কিনা জানালে উপকৃত হবো।
উত্তর : তালাক জায়েজ কাজসমূহের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ। তালাক না দিয়ে অর্থাৎ সংসার না ভেঙ্গে অন্য যত উপায় আছে আগে সেসব অবলম্বন করুন। মেয়েটির দিকে চিন্তা করে তালাক না দেওয়ার চেষ্টা করুন। ধৈর্য ধরুন, বহুদিন পরে হলেও বনিবনা হতে পারে। সময়ক্ষেপন করুন, চেষ্টা ও দোয়া করুন। তালাকের পথ ভালো নয়। এরপরও যদি মন স্থির না হয়, তাহলে শরীয়তের বিজ্ঞ আলেমের সহায়তায় তালাকের সুন্নত পদ্ধতি অবলম্বন করে অপ্রিয় সে বিষয়টির দিকে এগুতে হবে। যা কারও জীবনে কাম্য নয়।
প্রশ্ন : হারাম উপার্জনে জীবন যাপন করে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত কবুল হবে কি না?
আক্তার আহমেদ
উত্তর : কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী হারাম খাদ্যের দ্বারা গঠিত শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হারাম উপার্জনে অর্জিত শক্তি সামর্থের দ্বারা কৃত কোনো ইবাদতই কবুল হবে না। তবে, ইবাদতের আদেশটুকু পালিত হবে। কবুল হবে না মানে সওয়াব বা প্রতিদান না পাওয়া। এরদ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত না পাওয়া। কিন্তু হারাম উপার্জনওয়ালা ব্যক্তির নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত মাফ নয়। বিধান হিসাবে পালন করতেই হবে। দায়মুক্তি হতে পারে। তবে, কবুল হবে না। এসব আমলের পাশাপাশি তাকে অবিলম্বে হারাম ত্যাগ করতে হবে। হালাল পথ ধরতে হবে। কবুল হবে না বলে ইবাদত ছেড়ে দেওয়া মানুষকে কুফুরীর পথে ঠেলে দেয়। কেননা, এতে সংশোধন না হয়ে বরং আল্লাহর হুকুমের সাথে বিদ্রোহের মনোভাব অথবা নৈরাশ্যের আলামত দেখা যায়।
প্রশ্ন : প্রাচীন গুপ্তধন বা স্বর্ণমুদ্রা ইত্যাদি যার বর্তমান কোনো মালিকানা নেই, এগুলো যদি কোনো খাল, নদী, গোরস্তান বা রাস্তার মধ্যে মাটির নিচে পাওয়া যায়, তা হলে এটা যে লোক পাবেন, সে লোক কি এটার মালিক বলে সাব্যস্ত হবেন কি-না জানতে চাই। আর যদি কোনো ব্যক্তি এই মূল্যবান জিনিসটি অপর কোনো ব্যক্তির মালিকানা জমির নিচে পায় তা হলে ওই জিনিসটির মালিক কে হবে? যে খুঁজে পেল সে, নাকি যার জমিতে পাওয়া গেল সে? মনে রাখবেন, কয়েক শত বছর ধরে এই জিনিসটার কোনো মালিক নেই।
উত্তর : এ ব্যাপারে বাংলাদেশের আইন কি, তা ভালো কোনো আইনজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিন। শরিয়তের বিধান হচ্ছে যার জমিতে পাওয়া যাবে, সম্পদটি তার। ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু থাকলে এক পঞ্চমাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দিতে হবে। যদি ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা ছাড়া সরকারি বা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কোথাও পাওয়া যায়, তা হলে এক হিসাবে সম্পদটি সরকারের তথা জনগণের। আর কেউ দাবিদার না থাকলে অথবা শত শত বছরের প্রাচীন সম্পদ হলে যে খুঁজে পাবে সেও নিতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে, এ ক্ষেত্রেও এক পঞ্চমাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দিতে হবে। তবে, বাংলাদেশের আইনে প্রত্নতত্ত্ব বা গুপ্তধন বিষয়ে যা কিছু আছে এ দেশের নাগরিকদের তা মেনে চলাই কর্তব্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন