প্রশ্ন : একটা নামের বইয়ে হুজুর সা. এর দুই নাম না রাখা প্রসংগে হাদিস বর্ণনা করে বলেন, হুজুর সা. এর দুই নাম একত্রে রাখা জায়েয নাই। কিন্তু আরেকজন হুজুরের কাছ থেকে শুনলাম জায়েয আছে। কোনটা সঠিক? জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
উত্তর : বইয়ে যা লেখা আছে তা ঠিকই আছে। আর আপনি আরেকজন হুজুরের কাছে যা শুনেছেন তাও ঠিক। আপনার বোঝার কিছুটা ভুল হয়েছে। সাধারণত হুজুর সা. এর একটি বা দু’টি কিংবা ততধিক নাম প্রয়োজনে রাখা যায়। কেউ যদি রাখে তাহলে সেটা ভুল হবে না। গোনাহও হবে না। এ গেল হুজুরের কথার ব্যাখ্যা। এখন আসুন বইয়ের কথাটি কি? সেটি হল, নবী করিম সা. এর মূল নাম ‘মুহাম্মদ’ সা.। তবে তার উপনাম হচ্ছে ‘আবুল কাসেম’। দু’টো নাম একসাথে সাজালে দাঁড়ায় ‘আবুল কাসেম মুহাম্মদ’। এভাবে মিলিয়ে রাখা নিষেধ। নবী করিম সা. কাসেম নামক সন্তানের পিতা ছিলেন, তাই তার নাম আবুল কাসেম। নিজের নাম মুহাম্মদ। আরবে তখন কেউ যদি ‘আবুল কাসেম মুহাম্মদ’ নিজের নাম রাখত বা বলত, তাহলে মানুষের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এজন্য বাংলা অর্থে ‘কাসেমের বাবা মুহাম্মদ’ এভাবে কাউকে ডাকতে নিষেধ করা হয়েছিল। যদিও বর্তমানে এমন ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা নেই, তথাপি রাসূল সা. এর নির্দেশ পালনার্থে ঠিক এমন নাম রাখাই উচিত। বইয়ের নিষেধাজ্ঞাটি সম্ভবত এটি। যা আপনি পড়েছেন। আর হুজুরের কাছ থেকে শোনা বিষয়টি সাধারণ বৈধ নিয়ম। এ দু’টো আলাদা আলাদা বিষয়।
প্রশ্ন : আমি গাড়িতে চলার সময় ৫০০০ টাকা পাই, যা ওই সময় অনেক খোঁজাখুজির পরও কোন সঠিক মালিক পাই নাই, যা আমি আমার প্রয়োজনে খরচ করি। এ ব্যাপার আমি সঠিক দিক নির্দেশনা চাই, জানালে উপকৃত হবো ।
উত্তর : আপনার পাওয়া টাকা নিজে খরচ করা ঠিক হয়নি। যখন সুযোগ হবে টাকাটি যার তার নামে উপযুক্ত স্থানে দান করে দিবেন। আর আপনি নিজেই যদি দানগ্রহণের মত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে আবার দান করতে হবে না। ওই ব্যক্তির জন্য সওয়াবের দোয়া করতে থাকুন। ব্যক্তিটি অমুসলিম হলে তার জন্য হেদায়াত এবং পার্থিব কল্যানের দোয়া করবেন। এখন আসুন, টাকা পাওয়ার মাসআলা জেনে নেওয়া যাক। কুড়িয়ে পাওয়া টাকা বা বস্তু নিজে না উঠানোই ভালো। কেননা, এতে দায়-দায়িত্ব নিজের কাঁধে এসে যায়। অন্য কেউ এ দায়িত্বভার নিজের কাঁধে নিক। পারত পক্ষে আপনি নিবেন না। যদি টাকা বা বস্তু নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে, আর আপনি নিজেকে দায়িত্বশী ও বিশ্বস্ত মনে করেন, তাহলে মালিক তালাশ করে তার হাতে পৌঁছে দেওয়ার নিয়তে তুলতে পারেন। এরপর ক্ষেত্রবিশেষে কমপক্ষে দুই বছর অথবা বেশি এ টাকা নিজের কাছে হেফাজত করে রাখতে হবে এবং যথাসাধ্য ঘোষণা চালিয়ে যেতে হবে, যেন মালিকের কাছে এ খবর পৌঁছার সুযোগ হয়। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর টাকা বা বস্তুটি মালিকের আমলনামায় সওয়াব পৌঁছানোর নিয়তে দান করে দিতে হবে। এরপর যদি মালিক পাওয়া যায়, তাহলে তাকে টাকা দিতে আপনি বাধ্য নন। তবে, অভাবী লোক হলে আর আপনার সংগতি থাকলে টাকাগুলো দিলে অফুরন্ত সওয়াব হবে। যাকে শরীয়তে ইহসান বলা হয়। অবশ্য এটা নিতান্তই ঐচ্ছিক ও মানবিক ব্যাপার। আইনগতভাবে এ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো তাগিদ নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন