বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : ‘শিল্পে বাঁচি শিল্প বাঁচাই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশীয় চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সমাবেশ করেছে ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও)।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্যে এফটিপিও’র আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে নিয়ে যে কোনো
চ্যানেল সাড়া দিতে পারে। যদি তারা আসে তবে তাদের স্বাগত জানাব আমরা।’
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি গাজী রাকায়েত বলেন, ‘আমরা যে কোনো মূল্যে পাঁচ দফা দাবি আদায় করব। এটা আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাথমিক ধাপ। এরপর দাবি না মানলে আগামীতে আরো পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
অভিনেতা আবুল হায়াত বলেন, ব্যবসায়ীদের হাত থেকে নাটককে বাঁচাতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন আমরা সজাগ না হলে টিভি নাটকের ভবিষ্যৎ বলে কিছু থাকবে না। আমি এই সমাবেশকে সমর্থন জানাই।’
প্রবীণ চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শুধুই আশ্বাস দেন, কাজ করেন না। তার কাছে কোনো দাবি দাওয়া নিয়ে গেলে তিনি হাসিমুখে সাদরে গ্রহণ করেন। সেটা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাস্তবায়ন করেন না।
সমাপনী বক্তব্যে মামুনুর রশীদ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সরকারি কমিটি যদি আমাদের দাবিগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে না মানে, তবে পহেলা জানুয়ারি থেকে আমরা শিল্পী-কলাকুশলীরা গণ আন্দোলনে নামব। চ্যানেলের কাছে দ্বিতীয় দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো চ্যানেলে ১৫ ডিসেম্বরের পর একটিও বিদেশি সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং অবস্থায় প্রচার করে, তবে আমরা সেই চ্যানেলের সামনে অবস্থান নেব।
এ সমাবেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আরটিভি এটিএন বাংলা, এনটিভি, বাংলাভিশনসহ বেশ কিছু চ্যানেল। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন আরো অনেকেই। তাদের মধ্যে অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ বলেন, ‘যে অবস্থায় আমরা এসে দাঁড়িয়েছি, এখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার স্থান নেই। আমরা এখন সামনে আগাতে চাই। স্বাধীন জনগোষ্ঠী হিসেবে আমার নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রাখতে হলে এই পাঁচ দফা দাবির বিকল্প নেই।
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন আবুল হায়াত, সৈয়দ হাসান ইমাম, এ টি এম শামসুজ্জামান, জাহিদ হাসান, তৌকির আহমেদ, বিপাশা হায়াত, তারিন, সুইটিসহ নানা প্রজন্মের শিল্পী, নাট্যকার ও কলাকুশলীরা।
উল্লেখ্য, এফটিপিওর পাঁচটি দাবি হচ্ছেÑ দেশের বেসরকারি চ্যানেলে বাংলায় ডাবিংকৃত বিদেশি সিরিয়াল বন্ধ, টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণ, ক্রয় ও প্রচারের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট বা এজেন্সির হস্তক্ষেপ ব্যতীত চ্যানেলের অনুষ্ঠানসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ, দেশের টেলিভিশন শিল্পে বিদেশি শিল্পী এবং কলাকুশলীদের অবৈধভাবে কাজ করা বন্ধ, টেলিভিশন শিল্পের সর্বক্ষেত্রে এআইটির ন্যূনতম ও যৌক্তিক হার পুননির্ধারণ এবং ডাউন লিঙ্ক চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন