জনগণের বাহন রেল চলছে ভর্তুকি দিয়ে। দেড় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয় এই সরকারি বৃহত্তর প্রতিষ্ঠানটিকে। যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনা থাকলেও প্রতিনিয়তই হতাশায় ভুগতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। রেলের সেবার মান বাড়ানোর জন্য প্রাইভেট কোম্পানির সাথে চুক্তিও হয়। কিন্তু অতিতের অভিজ্ঞতায় বড় অঙ্কের টাকার চুক্তি হলেও সেবার মান সেই পুরোনো জায়গায়ই সীমাবদ্ধ থাকে। সেবার মান বাড়ানোর লক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রেল ভবনে পাঁচটি কোম্পানির সাথে চুক্তি হয়। এদিন মোট ১৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ।
জনা যায়, রেলওয়ের দৈনন্দিন ট্রেন পরিচালনায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। দুটি স্টেশনের মধ্যে লাইন ক্লিয়ার আদান-প্রদানে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়। দেশে সর্বপ্রথম ১৯৮৪ সালে রেলের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৯০ সালে ১৬০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হলেও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে অদ্যাবধি ৩২০৫ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা হয়েছে। যাদের সাথে চুক্তি করা হলো তারা হচ্ছে বাহন লিমিডেট, সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড., ফাইবার হোম লিমিটেড। পাঁচটি কোম্পানির সাথে রেলওয়ের মোট ১৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রেলওয়ের পক্ষে সকল ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর করেন চিফ সিগনাল ও টেলিকম কর্মকর্তা বেনুরঞ্জন সরকার। বাহন লিমিটেডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সাঈদ সামিউল হক, এম ডি বাহন লিমিটেড। সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলি মুর্তজা খান। বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন এর পক্ষে এরিক আস এমডি ও চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার। রবির পক্ষে পেরিহেম এলহামি চিফ টেকনিক্যাল অফিসার। ফাইবার লিমিটেডের পক্ষে রাজীব আহমেদ সুলতান, চীফ মার্কেটিং অফিসার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে বহুমুখী আয়ের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। রেলের অপটিক্যাল ফাইবার লিজ প্রদান রেলের আয় বৃদ্ধি কার্যক্রমের একটি অংশ হবে। রেল জনগণের বাহন। জনগণকে জানানোর উদ্দেশ্যে, স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য প্রকাশ্যে চুক্তি করছি। রেলওয়ে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি ভর্তুকি দিয়ে চলছে। রেলের অনেক সম্পদ আছে। আমরা সেখান থেকে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
মন্ত্রী বলেন, একটি দেশের ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য, টেকসই উন্নয়নের জন্য রেল খাতের উন্নয়ন জরুরি। ৭৫ পরবর্তী সরকার গুলো রেলের কোন উন্নয়ন করেনি। ভবিষ্যতে রেলের জমিসহ পণ্য পরিবহনের ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানোর বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন