শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আলফাডাঙ্গায় ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট-সাংবাদিক গ্রেপ্তার

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২২, ২:৪৯ পিএম

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় চাঁদাবাজির অভিযোগে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এদের বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টেবর)ফরিদপুর আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে বুধবার, গভীর রাতে আলফাডাঙ্গা পৌরসদরের বাকাইল মাদ্রাসা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই আলফাডাঙ্গা উপজেলার ইউসুফেরবাগ গোরস্থান মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা শরফুদ্দিন মোল্যা বাদি হয়ে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-৪।

আটককৃতরা হলেন, ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট নোয়াখালী জেলার সুধারাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আহসানউল্লাহ মাস্টারের ছেলে রাকিবুল হায়দার (৩০), ভুয়া সাংবাদিক জামালপুর জেলার সদর উপজেলার খরখড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে রেজাউল করিম খান (২৫), গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মোঘরখাল গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন (২৩), গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মধ্য চান্দড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে শামীম হোসেন (৪০), গাড়ীর ড্রাইভার গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার দিঘীরচালা গ্রামের মুতু্যূ আরব আলীর ছেলে আতাউর রহমান (৪৫)। একই ঘটনায় আরো দুইজন ভুয়া নারী সাংবাদিক শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আ. রাজ্জাকের মেয়ে জীবনী (১৮) ও জামালপুর জেলার সদর উপজেলার জুয়াইলপাড়া (সুলটিয়া বাজার) গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে সোমা (১৮) আটক করা হয়েছে।

মামলার বাদী ইউসুফেরবাগ গোরস্থান মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. শরফুদ্দিন মোল্যা (৪৯) গণমাধ্যম কে জানান এ ঘটনার দিন আমি নিজ বাড়িতে দুপুরের খানা খাওয়ার জন্য বাড়িতে যায়।

কিছুক্ষণ পর মাদ্রাসার শিক্ষক হাসমত আমাকে ফোনে জানায় যে, মাদ্রাসায় অডিট করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক এসেছে। এ সংবাদ শুনে আমি দ্রুত মাদরাসায় গেলে আমাকে দেখে আসামিরা ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলে, সমাজসেবা মন্ত্রনালয়ের অনুমতি স্বাপেক্ষে মাদ্রাসায় অডিট করতে এসেছি।

মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনেক দুর্নীতি হচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা অডিটের খরচের টিএ-ডিএ বিল বাবদ আমার নিকট হতে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নেন। অডিট খরচ আরো ৪০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেয়। এরপর তারা বুধবার সন্ধ্যায় আলফাডাঙ্গা পৌর এলাকায় বাঁকাইল মাদ্রাসায় ঢুকে একই কায়দায় মাদ্রাসার মুহতামিমের কাছ হতে টাকা হাতানোর চেষ্টা করে। ওই মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. ইদ্রিস আলী (৫০) অডিট বিষয়ে সন্ধেহ হলে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের খুলে বলেন।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা প্রেকক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম জানান, খবর পেয়ে কয়েকজন সহকর্মীদের নিয়ে বাঁকাইল মাদ্রাসায় গিয়ে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটসহ কথিত সাংবাদিকদের কাছে থাকা পরিচয়পত্র যাচাই করে তাদের স্ব-স্ব অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, তারা অবৈধ লাভের উদ্দেশ্যে ঢাকা হতে আলফাডাঙ্গার বিভিন্ন মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকারি কর্মচারি পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবী করেছে। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক ইউনুচ আলী বিশ্বাস বলেন, তাদের ব্যবহৃত গাড়ী, যার নাম্বর ঢাকা- মেট্রো-চ-১৬-৩৪৫৭, (নোয়া গাড়ি), ক্যামেরা, পাঁচটি মোবাইল ফোন, চার্জার, দৈনিক প্রথম বেলা, দৈনিক বিজয় বাংলা, দৈনিক নাগরিক ভাবনাসহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার একাধিক ভুয়া আইডি কার্ড ও কিছু ভুয়া কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতরা মূলত একটি প্রতারক চক্র। তাদের কাছে বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র দেখে প্রাথমিক পর্যায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি প্রমাণিত হওয়ায় মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন