(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
দ্বিতীয়ত ইসলাম স্বামী-স্ত্রী কে কষ্ট সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা, ধৈর্যশীলতা,অল্পে তুষ্টি ও কৃতজ্ঞতার মত মহৎ গুণাবলী অর্জনের নির্দেশ দিয়েছে। কারণ তারা যদি পরস্পর ধৈর্যশীল, সহনশীল ও সহানুভূতিশীল হয়, সংসার জীবনে যে বিপদ -আপদ, হাসি -কান্না ও সুখ-দুখ আসে তা সহাস্য বদনে মেনে নেয়, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিক যে শক্তি -সামর্থ্য দান করেছেন এর উপর তুষ্ট থাকে, রাব্বে কারিম তাদেরকে যে নেয়ামত দান করেছেন তার কৃতজ্ঞতা আদায় করে, তাকে তুচ্ছ ও হেয় মনে না করে, সন্তান যে আল্লাহর দেয়া মহান এক নেয়ামত ও আমানত তা উপলব্ধি করে তাকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তুলার চেষ্টা করে এবং এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলার কাছে মহা পুরস্কার প্রাপ্তির আশা করে তাহলে ওই স্বামী-স্ত্রী কখনো পরকীয়ায় জড়াবে না। বরং তারা দাম্পত্য জীবনকে আল্লাহর পক্ষ থেকে এক শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে মনে করবে।
তৃতীয়ত: পারস্পরিক ভালোবাসা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায় এমন কিছু টিপস গ্রহণ করতে স্বামী- স্ত্রীকে ইসলাম আদেশ দিয়েছে। যেমন স্বামী-স্ত্রী মাঝে মাঝে একই পাত্র থেকে আহার গ্রহণ করা, একে অপরের মুখে লোকমা উঠিয়ে দেওয়া। আম্মাজান আয়েশা রা. গ্লাসের যে অংশে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতেন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম ও সেই অংশে নিজের মুখ লাগিয়ে অবশিষ্ট পানি পান করতেন । গোশতের হাড্ডির যে অংশ থেকে দাঁত দ্বারা কামড়ে খেতেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সে অংশে মুখ রেখে অবশিষ্ট গোশত কামড়িয়ে খেতেন । এটাই স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা শিক্ষা।
স্বামীকে কোন বিষয়ে চিন্তিত দেখলে তার পাশে বসা, তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত¡না দেওয়া ও তার সাহস যুগানো। আম্মাজান খাদিজা রা.রাসুলের দুঃখের সময় তার পাশে ছিলেন। তাকে সাহস যুগিয়েছেন। অভয় বাণী শুনিয়েছেন।
অফিস- আদালত অর্থাৎ নিজ কর্মস্থল থেকে ফিরে আসলে ঘরে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় সালাম দিয়ে প্রবেশ করা । স্ত্রী ও মুচকি হাসি দিয়ে তাকে বরণ করা ,তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, তার আরাম- আয়েশের ব্যবস্থা করা।তাকে বাতাস দেওয়া, ফ্যান ছেড়ে দেওয়া ও পানি এনে দেওয়া। অফিসে যাওয়ার সময় হলে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়া , ব্যাগ গুছিয়ে দেয়া,জুতা মুছে দেয়া। স্ত্রীর কপালে কিংবা হাতে চুমু দেওয়া।পরস্পর ভালোবাসার আদান-প্রদান করা। একে অপরের জন্য দোয়া প্রার্থনা করা। বাসা বাড়ীকে সর্বদায় পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখা। নিজে সেজেগুজে থাকা। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, স্ত্রীরা বাসায় নোংরা ভাবে থাকে। সাজগোজ করে না। কিন্তু বাহিরে বের হলে সেজেগুজে নিজেকে পরিপাটি করে বের হয় যেন সে আকাশের পরী। অথচ আপন মানুষটির সামনে নিজের সৌন্দর্য কে সবচেয়ে বেশি প্রকাশ করা, সেজেগুজে থাকা , পরিপাটি করে রাখা ই বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। যাতে স্বামীর অন্তরে পরনারীর কল্পনাও না আসে।
রান্না -বান্না ও সাংসারিক কাজে স্ত্রীকে কিছু কিছু সাহায্য করা ।এতে স্ত্রী মনে করবে যে আমার স্বামী আমার প্রতি অনেক সহানুভূতিশীল ও আন্তরিক। পরকীয়া রোধের সবচেয়ে বড় উপায় হলো হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও স্বামী- স্ত্রী পরস্পরকে সময় দেওয়া, কিছু সময় একান্তে কাটানো, পরস্পর খোশগল্প করা, রোমান্টিক কথাবার্তা বলা,ভালোবাসার আদান-প্রদান করা। একে অপরকে সুখ- দুঃখ শেয়ার করা।সংসারের আয়- উন্নতি, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরস্পর আলোচনা করা। অফিসে থাকা অবস্থায় মাঝেমধ্যে তার সাথে ফোনে কথাবার্তা বলা তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করা মোটকথা স্বামী- স্ত্রী পারস্পরিক সম্পর্ককে দৃঢ় ও মজবুত করা,নিজেদের শারীরিক কিংবা মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ না দেওয়া। যাতে তাদের ভালোবাসার মধ্যে তৃতীয় কেউ নক করলে সে ব্যর্থ ও লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে আসতে হয়। তাদের মধ্যে ঢোকার চান্সই না পায়।
প্রতিকারের দ্বিতীয় অবস্থা: যে যে কারণে পরকীয়া সৃষ্টি হতে পারে ইসলাম স্বামী- স্ত্রীকে সেগুলো থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকতে বলেছে। যেমন (১)পর নারী কিংবা পরপুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দেয়া, (২)বেগানা নারী-পুরুষ পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করা, (৩)কোমল ভাষায় কথা বলা, (৪)নারী পুরুষ অবাধে মেলামেশা করা। এগুলোকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।
আল্লাহ পাক বলেন: হে নবী!মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। ইহাই তাদের জন্য উত্তম। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। সূরা নূর,আয়াত নং ৩০-৩১
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ (সা)বলেন আল্লাহ তাআলা বলেছেন: দৃষ্টিপাত শয়তানের একটি বিষাক্ত তীর। যে ব্যক্তি মনের চাহিদা সত্তে¡ও দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয় আমি তার পরিবর্তে তাকে সুদৃঢ় ঈমান দান করব যার মিষ্টতা সে অন্তর অনুভব করবে। আল মু›জামুল কাবীর তাবারানী,হাদিস নং-১০৩৬২
হযরত আবু মুসা আশআরী রা.থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) এরশাদ করেন, কুদৃষ্টিকারীর প্রত্যেক দৃষ্টিই ব্যভিচারী। যে নারী গায়ে সুগন্ধী মেখে কোন মজলিশের পাশ দিয়ে যায় সেও ব্যভিচারিণী।-সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-২৭৮৬
পর পুরুষের সামনে সাজসজ্জা ও দেহ প্রদর্শন না করা
আল্লাহ তাআলা বলেন, নারীরা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান,তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়নার আঁচল বক্ষদেশে নামিয়ে দেয়। তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা, স্বজাতি নারী, মালিকানাধীন দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য যেন প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পা নিক্ষেপ না করে।-সূরা নূর, ৩১ অর্থাৎ পায়ে যদি নুপুর পরা থাকে, তবে হাঁটার সময় এমনভাবে পা ফেলবে না, যাতে নুপুরের আওয়াজ কেউ শুনতে পায় বা অলংকারের পারস্পরিক ঘর্ষণজনিত আওয়াজ কোন পুরুষের কানে পৌঁছে। তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন-২/৪৩০
বিনা প্রয়োজনে স্বামী- স্ত্রীকে পরপুরুষ বা পরনারীর সাথে মেলামেশা করতে কিংবা খোশ গল্পে মেতে উঠতে অথবা কোমল ভাষায় কথা বলতে ইসলাম কঠোর ভাবে নিষেধ করেছে অফিসে, নিজ কর্মস্থলে স্বীয় দায়িত্ব পালনের প্রতি মনোযোগী থাকবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া অফিসার কিংবা পর পুরুষের সাথে কথা বলবে না। একাকীত্বে খোশ গল্পে মেতে উঠবে না টাইম পাস করবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী কথা বলবে তাও নিজের প্রতি আকর্ষণ করে কোমল ও নম্র ভাষায় নয়। বরং স্বাভাবিক ভাষায় কথা বলবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন: যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো,তবে পর পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে যার অন্তরে ব্যাধি আছে । এবং তোমরা সঙ্গত কথা বলবে। সূরা আহযাব আয়াত নং ৩২
হযরত উমর রা.থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোন বেগানা নারী-পুরুষ একাকী অবস্থান করলে শয়তান তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে সেখানে উপস্থিত হয়( এবং তাদেরকে কুকর্মের কুমন্ত্রণা দেয়) (সুনানে তিরমিজি ১৪১৯) হযরত উকবা ইবনে আমির রা. থেকে বর্ণিত,নবীজি(স)ইরশাদ করেন, তোমরা পর নারীদের কাছে যাবে না। এক আনসারী সাহাবী আরজ করলেন,হে আল্লাহর রাসূল! দেবরের কি বিধান?রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন,দেবরের সাথে সাক্ষাৎ তো মৃত্যুতুল্য। সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৫২৩২ সহীহ মুসলিম,হাদিস নং-৫৮০৩
ইসলাম স্ত্রীকে স্বামী গৃহে অবস্থান করে সন্তানদের দেখাশোনা এবং সংসার গোছানোর আদেশ করেছে । আল্লাহ পাক বলেন: হে নারীরা তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান কর এবং জাহেলী যুগের মতো সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বের হয়ো না। নামাজ কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করো। সূরা আহযাব, আয়াত নং ৩৩
এখানে একটি প্রশ্নো উত্থাপিত হয়,তাহলে কি ইসলাম স্ত্রীকে স্বামী গৃহে আবদ্ধ করতে বলে?তাকে কোন কর্ম করার অধিকার দেয় না?
এর উত্তর হল,না ইসলাম স্ত্রীকে স্বামী গৃহে আবদ্ধ করেনি বরং তাকেও কর্ম করার অধিকার দিয়েছে তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত ও যুগোপযোগী কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যেমন
১. কর্মস্থল নিরাপদ হওয়া।
যেহেতু নারী জাতি কোমল,অবলা ও সাদাসিধা হয়ে থাকে , পুরুষ ইচ্ছা করলেই তাকে সহজে পটাতে পারে তাই ইসলামের নির্দেশনা হল, নারীর কর্মের জন্যে নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র তৈরি করা। যেখানে তার জান, মাল ,ইজ্জত-আবরু শতভাগ নিরাপদ থাকে। আর এরকম যথোপযুক্ত কর্মক্ষেত্র তৈরি করা প্রধানত রাষ্ট্রের দায়িত্ব।তারপর ব্যক্তি,পরিবার ,ও সমাজও আপন আপন স্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
২. শালীন পোশাক পরে নিজেকে আবৃত করে বের হওয়া
স্ত্রী ভদ্র ও শালীন পোশাক পরিধান করে কর্মস্থলে যাতায়াত করবে। দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সৌন্দর্য বিকশিত হয় এমন পোশাক পরিধান করবে না । এতে বখাটে ছেলেদের উত্যক্ত ও ইভটিজিং থেকে নিরাপদ থাকবে। মনে রাখবে, কলার উপর আবরণ যতক্ষণ থাকে কলার দাম থাকে । ছিলা কলার কোন মূল্য থাকে না।
আল্লাহ তালা বলেন, হে নবী আপনি আপনার স্ত্রীদের, আপনার কন্যাদের ও মুমিনদের স্ত্রীদেরকে বলুন,তারা যেন তাদের চাদর নিজেদের মুখের উপর নামিয়ে দেয় ।এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে,ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু (সূরা আহযাব ৫৯)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, তোমরা নিজগৃহে অবস্থান করো (পর পুরুষের সামনে) সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বেড়িও না যেমন প্রাচীন জাহেলী যুগে প্রদর্শন করা হতো।সূরা আহযাব, ৩৩
এখানে প্রাচীন জাহেলিয়াত দ্বারা মহানবীর প্রাক আবির্ভাব কালকে বোঝানো হয়েছে।সেকালে নারীরা নির্লজ্জ সাজ-সজ্জার সাথে নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াতো। প্রাচীন জাহিলিয়াত শব্দটি ইঙ্গিত করছে নব্য জাহেলিয়াত বলে একটা জিনিসও আছে যা এক সময় আসবে ।অন্ততপক্ষে অশ্লীলতার দিক থেকে তো সেরকম এক জাহেলিয়াত আমরা দেখতে পাচ্ছি। এ নব্য জাহেলিয়াতের অশ্লীলতা এতটাই উগ্র যে তার সামনে প্রাচীন জাহেলিয়াত কবে ¤øান হয়ে গেছে। তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন ৩/৮১ আধুনিক সভ্যতার নামে প্রাচীন জাহেলিয়াতের সর্বগ্রাসী অশ্লীলতা ও বেলেল্লাপনা জীবন ধারার প্রতিটি শাখায় শাখায় উপচে পড়েছে। এ সকল অনিষ্ট ও বিপর্যয়ের মূল হলো পর্দাহীনতা।অনুভূতিহারা অনেক রুগ্নচিন্তার মা বাবা কোমলমতি সন্তানদের পর্দা করা অপছন্দ করেন। এজন্যই বলতে হয় মানব সভ্যতার এখন মুমূর্ষ কাল অতিক্রান্ত হচ্ছে। মানুষ ভোগবিলাসের জীবনে প্রবল ভাবে মেতে উঠেছে ।কৃত্রিম জীবন ও নব্য সভ্যতার পঙ্কিলতায় আকণ্ঠ ডুবে গিয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.)ইরশাদ করেন দুই শ্রেণীর লোক জাহান্নামী কিন্তু আমি এখনো তাদের কে দেখিনি। এক,যাদের হাতে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে।সেই চাবুক দ্বারা তারা মানুষকে অন্যায় ভাবে মারধর করবে। দুই,এমন নারী যারা বস্ত্র পরিধান করেও পাতলা কিংবা আঁটসাঁট হওয়ার কারণে বিবস্ত্র থাকবে। পর পুরুষকে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও তাদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথার চুলের খোঁপা হবে উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়।
মুফতি ও মুহাদ্দিস, শেখ জনুরুদ্দীন র. দারুল কুরআন মাদরাসা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন