বিরূপ প্রকৃতির প্রভাব এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পড়েছে অনেকবার। বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে কিছু ম্যাচে, কিছু ম্যাচ গেছে ভেসে। এবার ফাইনাল মাঠে গড়ানো নিয়ে জেগেছে প্রবল শঙ্কা। রিজার্ভ ডে-তে খেলা হওয়া, এমনকি ট্রফি ভাগাভাগির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
বিশ্বকাপের চলতি আসরে বৃষ্টি সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে মেলবোর্নে। সেখানেই আগামীকাল হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের শিরোপা নির্ধারণী লড়াই। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, ওই দিন মেলবোর্নে ১৫ থেকে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টির ৯৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল সকালে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে আবহাওয়া ব্যুরোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বৃষ্টির প্রবল (শতভাগের কাছাকাছি) সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রপাতের সঙ্গে মুষলধারে বর্ষণ হতে পারে।’
বিশ্বকাপের নক-আউট ম্যাচগুলোর জন্য অবশ্য একটি করে রিজার্ভ ডে রেখেছে আইসিসি। তাই ফাইনাল ম্যাচটি সোমবার মাঠে গড়াতে পারে। তবে সেদিনও মেলবোর্নে ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টির ৯৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।
গ্রুপ পর্বে কিংবা প্রাথমিক পর্বের ম্যাচের ফল পেতে দুই দলকে কমপক্ষে ৫ ওভার খেলতে হয়। কিন্তু নক-আউট পর্বে অন্তত ১০ ওভারের ম্যাচ হতে হবে। প্রথমে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী রোববার ফাইনাল ম্যাচটি সম্পন্ন করার। ওভার কমিয়ে হলেও সেদিনই ম্যাচ শেষ করার চেষ্টা করা হবে। সেটাও সম্ভব না হলে বিবেচনায় নেওয়া হবে রিজার্ভ ডে। আগামীকাল যদি খেলা শুরু হয় এবং ম্যাচ শেষ করা সম্ভব না হয়, তাহলে আগের দিন যে অবস্থায় শেষ হবে রিজার্ভ ডে-তে সেখান থেকেই আবার খেলা শুরু হবে। একবার টস হয়ে গেলে, ম্যাচ হচ্ছে হিসেবে বিবেচিত হয়। আবার, যদি কাল টস হয় এবং এরপর বৃষ্টির বাগড়ায় ওভার কমিয়ে আনা হয় কিন্তু খেলা সম্ভব না হয় তাহলে রিজার্ভ ডে-তে পুরো ২০ ওভারের লড়াই-ই হবে।
ফাইনালের মূল দিনের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট বরাদ্দ থাকে। তবে ম্যাচ যদি রিজার্ভ ডে-তে গড়ায়, তাহলে বাড়তি দুই ঘণ্টা সেদিনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। দুই দিন মিলিয়েও যদি ফল আনার জন্য ন্যূনতম ওভার খেলা সম্ভব না হয়, তাহলে দুই দলকে ট্রফি ভাগ করে দেওয়া হবে। ২০০২-০৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। সে সময় প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী রিজার্ভ ডে-তে নতুন করে খেলা হলেও ফল আসেনি। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সেমি-ফাইনাল দুই দিন ধরে হয়েছিল।
এই আসরে মেলবোর্নে সুপার টুয়েলভে আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের ম্যাচে টস করাই সম্ভব হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে স্মরণীয় জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। এছাড়া হোবার্টে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের ম্যাচটি পণ্ড হয় বৃষ্টিতে। সিডনি ও অ্যাডিলেডে দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান ও ভারত-বাংলাদেশের ম্যাচেও বাগড়া দেয় বৃষ্টি। তবে ফল হয় এই দুই ম্যাচে। সুপার টুয়েলভে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচেও বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি মাঠে গড়ায় বেশ ভালোভাবেই। উপহার দেয় রোমাঞ্চ ও উত্তেজনা। আয়োজক, খেলোয়াড় এবং সমর্থকরা ফাইনালেও এমন সৌভাগ্যকে পাশে চাইবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন