মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে আগামী রোববার থেকে শুরু হচ্ছে ‘দ্য গ্রেট শো অন আর্থ।’ তবে ছোট্ট দেশটিতে বিশ্বকাপের আয়োজন হলেও নিরাপত্তা নিয়ে আছে প্রশ্ন। একদিকে ফুটবলার ও স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা, অন্যদিকে বিশ্বকাপ উপলক্ষে যে ১২ লাখ মানুষ কাতার যাবেন, তাদের সুরক্ষার প্রশ্নও আছে। কম জনসংখ্যার কাতারের পক্ষে একা এতবড় আসরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই অন্তত ১৩টি দেশ থেকে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৩টি দেশের কাছে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কাতারে একমাত্র পাকিস্তানই সেনা পাঠিয়েছে। গত অক্টোবরেই সাড়ে চার হাজার পাকিস্তানি সেনা কাতার পৌঁছেছেন। নিরাপত্তার প্রশ্নে তাদের ওপরই ভরসা করছে কাতার। তবে কাতারকে নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে যে সব দেশ সাহায্য করছে তাদের মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ফ্রান্স, জর্ডান ও যুক্তরাজ্য।
পাকিস্তানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, সুসম্পর্কের কথা মাথায় রেখে কাতার সরকারের বিশেষ অনুরোধেই সেখানে সেনা পাঠানো হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পরেই আছে তুরস্ক। তারা তিন হাজার নিরাপত্তা কর্মী পাঠিয়েছে কাতারে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, দাঙ্গারোধী পুলিশ পাঠিয়েছেন তারা। এ ছাড়া কাতারের নিরাপত্তা কর্মীদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে তুরস্ক। প্রতিযোগিতার সময় কিভাবে নিরাপত্তার বিষয়টি সামলাতে হবে, তাও শেখানো হয়েছে তাদের।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলি বকির বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণের ওপর খুব জোর দেওয়া হয়েছিল। এমনিতে কাতারের জনসংখ্যা বেশি নয়। তাই আমাদের কাছে প্রশিক্ষিত বাহিনী খুবই জরুরি।’
সাধারণত আরব দেশগুলো বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল। কাতারও তার ব্যতিক্রম নয়। গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের সদস্য দেশগুলোতে দুই থেকে তিন কোটি বিদেশি শ্রমিক থাকে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শ্রমিক থাকে আমিরাত, বাহরাইন, সৌদি আরব, ওমান, কাতার ও কুয়েতে। কাতারে প্রায় ২০ লাখ বিদেশি শ্রমিক আছে। যদিও দেশটির নাগরিকের সংখ্যা মাত্র চার লাখ।
অধ্যাপক বকির বলেছেন, ‘কাতারের পক্ষে বিশ্বকাপের দুই সপ্তাহ ধরে সবার সুরক্ষার ব্যবস্থা করা অসম্ভব।’ তবে পাকিস্তান থেকে সেনা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক খুব ভালো। পাকিস্তান তাদের সুরক্ষা কর্মীদের এখানে পাঠায়। প্রচুর পাকিস্তানি কাজও করতে আসে।’ উল্লেখ্য, ১৯৯০-৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনারা কুয়েতের সেনাদের প্রযুক্তিগত ও পরামর্শদাতার ভূমিকায় ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন