বিশ্বকাপ শুরুর আগেই একের পর এক বিতর্কের মুখে পড়েছে কাতার। কখনো বিয়ার নিষিদ্ধ করা, কখনো সমকামী সম্পর্কের সমর্থন করায় দর্শকদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে বাধা দেয়া, কখনো বা সমর্থকদের গান গাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা- ইত্যাদি নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে বা হচ্ছে কাতারের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার পরও বিনিয়োগকারীরা সরছেন না বিশ্বকাপ থেকে। এবার সব মিলিয়ে ৭৬টি সংস্থার বিনিয়োগ রয়েছে বিশ্বকাপে। কেন এত বিনিয়োগ? কারণ হিসেবে উঠে আসছে লাভের অঙ্ক। এবারের বিশ্বকাপ থেকে বিপুল লাভের আশা করছেন বিনিয়াগকারীরা। তাই এত বিতর্কের মাঝেও সরছেন না তারা।
এবারের বিশ্বকাপে সরাসরি বিনিয়োগকারী হিসেবে রয়েছে ৭টি সংস্থা। এ ছাড়া ৩২টি দলের বিনিয়োগকারী হিসাবে রয়েছে আরো ৬৯টি সংস্থা। তাদের সঙ্গে কথা বলেছে ‘ব্লুমবার্গ নিউজ’। এই সংস্থাগুলোর বেশির ভাগই এমন কিছু দেশের যেখানে মানবাধিকার, সমকামী সম্পর্ক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। নিজেদের দেশে মানবাধিকার নিয়ে সক্রিয় এই সব সংস্থা। তা হলে যে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এত অভিযোগ উঠছে সেখানে কেন সংস্থাগুলি চুপ করে রয়েছে।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭৬টি সংস্থার মধ্যে ২০টি সংস্থা জানিয়েছে, তারা মানবাধিকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তাই বিশ্বকাপ চলাকালীন নিজেদের প্রচারের পদ্ধতিতে কিছু বদল আনতে পারে তারা। কিন্তু সেটা কিভাবে তা জানায়নি তারা। ১৩টি সংস্থা জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রচারের পদ্ধতিতে বদল করেছে। কিন্তু বাকিদের মুখে কুলুপ।
তার একটা বড় কারণ এই বিশ্বকাপের দর্শক সংখ্যা। প্রায় ৫০০ কোটি দর্শক এবারের বিশ্বকাপ দেখবেন, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ। এত দর্শক সরাসরি ওই সব সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন। ফলে তাদের প্রচারও হবে। এই প্রচারের লোভ সামলানো কঠিন। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছিল ফিফার। এ বার সেই আয়ের অঙ্ক আরও কয়েক গুণ বাড়তে পারে। তাই যাবতীয় বিতর্ক ধামাচাপা দিতে চাইছে ফিফাও। ওই কারণেই ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘তিন ঘণ্টা বিয়ার না খেলে কেউ মারা যাবেন না।’
ইউরোপের এক মিডিয়া অ্যানালিস্ট সারা সিমোন বলেছেন, ‘এবারের বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি কাটাছেঁড়া হবে। ৫ বা ১০ বছর আগে মানবাধিকার নিয়ে যা আন্দোলন হতো তা এখন অনেক বেশি। কিন্তু সবার উপরে রয়েছে আর্থির মুনাফা। চার বছর অন্তর এই সুযোগ পায় সংস্থাগুলো। তারা কেন সেই সুযোগ হারাবে। তা ছাড়া কোভিডের সময় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় সব সংস্থার। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার একটা সুযোগ তাদের কাছে রয়েছে। সেটাই তারা কাজে লাগাচ্ছে।’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন