শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ইংল্যান্ডের ড্র’য়েও যুক্তরাষ্ট্রের ‘জয়’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম

ইংল্যান্ডের জন্য সমীকরণটা কঠিন কিছুই ছিল না। জিতলেই প্রথম দল হিসেবে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোল নিশ্চিত হয়ে যেত হ্যারি কেইনদের। বিশ্বকাপে এর আগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল দুইবার। প্রথমবার ব্রাজিলে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১-০ গোলে হেরে ফিরেছিল ইংল্যান্ড। সে ইতিহাস এখনো ইংলিশদের লজ্জা দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০১০ সালেও যুক্তরাষ্ট্রকে হারাতে পারেনি থ্রি লায়ন্সরা। গতপরশু রাতে আল বাইত স্টেডিয়ামে সবদিক থেকে এগিয়ে থেকেও গোলশূন্য ড্র মেনে নিতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। এতে বি গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যাওয়ার সম্ভাবনা সব দলেরই টিকে রইল।
মার্কিনীদের কোচ গ্রেগ বারহালটর ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডারের প্রয়োজনীয়তা দেখেন না দলে। দলে একজন স্বীকৃত গোলশিকারি না থাকায় চেলসির ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচকে নাম্বার টেনের ভূমিকায় খেলনোর পরামর্শ দিয়েছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কোচের যুক্তি, পলিসিচের প্রেসিং ফুটবলই সুযোগ সৃষ্টি করতে যথেষ্ট। ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ড এতে অপ্রয়োজনীয় মার্কিন কোচের দর্শনে। এই প্রেসিং ফুটবলের ভালো ও খারাপ, দুই দিকই প্রথম ম্যাচে দেখে ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দুর্দান্তভাবে ম্যাচ শুরু করলেও ওয়েলসের বিপক্ষে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল পুলিসিচ-অ্যাডামসরা। তবে নিজের দর্শন বলে কথা, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও বারহালটার সরেননি নিজের কৌশল থেকে। তবে ম্যাচ শেষে বলতে হচ্ছে ভাগ্যিস সরেননি, না হলে এমন দুর্দান্ত একটা ম্যাচ কি দেখা যেত!
এই ম্যাচটি উপভোগ্য করে তোলায় ইংল্যান্ডের খুব একটা ভূমিকা নেই। তবে ম্যাচের প্রথম সুযোগটা ইংলিশরাই পেয়েছিল। ইরানকে ৬ গোলের বন্যায় ভাসিয়ে আসর শুরু করা গ্যারেথ সাউথগেটের দল, গত ম্যাচে এগিয়ে যেতে পারত দশম মিনিটে। ডি-বক্সে বুকায়ো সাকার পাস ফাঁকায় পেয়ে শট নেন হ্যারি কেইন। কিন্তু সামনে ছুটে আসা ডিফেন্ডার ওয়াকার জিমারম্যানের পায়ে প্রতিহত হয়। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ দল খেলেছে মুগ্ধ করা ফুটবল। ক্রমাগত প্রেস করে ইংল্যান্ডের আক্রমণের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়েছে, পাসিং ফুটবল খেলে ইংলিশ রক্ষণকে করেছে হতভম্ব। কিন্তু সমস্যা সেই একজায়গায়। একজন গোলশিকারি যে নেই যুক্তরাষ্ট্রের। বারবার সুযোগ সৃষ্টি করেও গোলের দেখা পায় নি এই কারণেই।
বিরতির আগে কেইনের সেই আক্রমণ ব্যাতিত সাউথদেটের দল নিয়ে বলার মত আর কোন ঘটানা নেই। অথচ যক্তরাষ্ট্রের হয়ে কখনো রাইট, কখনো বা উইয়াহ সুযোগ তোইরি করেছেন, আবার নষ্ট করেছেন। একবার তো পুলিসিকের শট পিকফোর্ডকে ফাঁকি দিয়েও ক্রসবারে লেগে ফিরেছে। তবে ইংল্যান্ড রক্ষণকে নিয়ে প্রথমার্ধে ছেলেখেলা করেছেন ওয়েস্টিন ম্যাককেনি। জুভেন্টাস মিডফিল্ডার যখনই বল পেয়েছেন, আতঙ্ক ছড়িয়েছেন। দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুতে দাপট দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এতো প্রেসিং করলে ফুটবলাররা এক সময় ঝিমিয়ে আসবেনই । ওয়েলস-ম্যাচের মতোই ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে দলটি। রাহিম স্টার্লিংয়ের বদলি হিসেবে জ্যাক গ্রিলিশের মাঠে নামাও ইংল্যান্ডের পক্ষে এসেছে। ৭০ মিনিটের পর প্রথমবারের মতো মনে হয়েছে ইংল্যান্ডই আসলে এই ম্যাচদের ফেবারিট। টানা ৬/৭ মিনিটের সে দাপট অবশ্য একটু পরই হারিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে কিন্তু গোল আর পায়নি তারা। ফলে দুই ম্যাচ থেকে দুই পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বারহালটরের দলকে। ওদিকে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলশূন্য ড্র করার রেকর্ডকে ১২-তে নিয়েছে ইংল্যান্ড। তবে এই ড্রয়ের মাঝেই শেষ ষোলোয় ওঠার সম্ভাবনা ভালোমতো টিকিয়ে রাখল যুক্তরাষ্ট্র। উজ্জ্বল সম্ভাবনা ইংল্যান্ডেরও। দুই ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। দুইয়ে ইরানের সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট। ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে যুক্তরাষ্ট্র। আর তলানিতে থাকা ওয়েলসের সংগ্রহ ১ পয়েন্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন