দীর্ঘ একযুগ পর বিশ্বকাপে জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। সর্বশেষ ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে সার্বিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। এরপর থেকে টানা দু’টি বিশ্বকাপে জয়হীন ছিল অস্ট্রেলিয়া। অবশেষে কাতার বিশ্বকাপে মিললো জয়ের দেখা। টুর্নামেন্টের ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তিউনিশিয়াকে হারিয়ে শেষ ষোল’র আশা বাঁচিয়ে রাখলো সকারুজরা। গতকাল বিকালে আল ওয়াকরার আল জানুব স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া ১-০ গোলে হারায় তিউনিশিয়াকে। বিজয়ী দলের হয়ে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন মিচেল ডিউক।
কাল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করার খেসারত তিউনিশিয়া দিলো ম্যাচ হেরে। তিউনিশিয়া সমর্থকদের জন্য আপসোস হয়ে থাকবে এ ম্যাচটি। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে ড্র করেছিল দলটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও পয়েন্ট পেতে পারতো তারা। যদিও ম্যাচের প্রথমার্ধে অপেক্ষাকৃত কিছুটা ভালো খেলে অস্ট্রেলিয়া গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে পরিচ্ছন্ন প্রাধান্য ছিল তিউনিশিয়ার। গোটা চারেক ভাল সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। দুর্ভাগ্য আফ্রিকার দেশটির, একটি সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি দলটি। প্রথমার্ধে দু’দলই খেলেছে সমান তালে। তবে বল পজেশনে কিছুটা এগিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তারা প্রথম সুযোগটি কাজে লাগিয়েই গোল আদায় করে নেয়। ম্যাচের ২৩ মিনিটে বাম দিক থেকে গুডউইনের ক্রসে দারুণ হেডে তিউনিশিয়ার গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ডিউক (১-০)। ব্যবধান দ্বিগুণ করেই বিরতিতে যেতে পারতো অস্ট্রেলিয়া। ৪৪ মিনিটে একই কম্বিনেশনে সুযোগটি পেয়েছিল তারা। গুডউইনের ক্রসে এবারও হেড নিয়েছিলেন ডিউক, কিন্তু তিউনিশিয়ার গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিয়েছেন বল। তিউনিশিয়ার সামনেও এসেছিল সমতায় ফেরার সুযোগ। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে দারুণ একটি প্রচেষ্টা ছিল ইউসুফ মাসাকানির। কিন্তু বক্সের মাথা থেকে তার নেওয়া গড়ানো শট বাইরে চলে যায়।
বিরতির পর ম্যাচের সময় যতই গড়িয়েছে ততই আক্রমণ বাড়িয়েছে তিউনিশিয়া। বল পজেশনে প্রায় ৬০ ভাগ এগিয়ে ছিল তারা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া রক্ষণ সামলে শেষ পর্যন্ত লিড ধরে রাখে। মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে সবচেয়ে সহজ সুযোগ তৈরি করেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি সকারুজরা। ম্যাচের ৭১ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে জেমি ম্যাকরালেন ক্রস নিয়েছিলেন ম্যাথু লেকিকে উদ্দেশ্য করে। লেকির সামনে দিয়েই বলটি চলে যায়, কিন্তু তিনি পায়ে বল সংযোগ ঘটাতে পারেননি। এরপর আক্রমণ বলতে ছিল তিউনিশিয়ার। চার/পাঁচবার তারা অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখে হানা দিয়েছিল। এর মধ্যে ৭২ মিনিটে ইউসুফ মাসাকানির শট রুখে দেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক। ৭৪ মিনিটে তারই হেড চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ৮৬ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে ইয়াসিনের ডান পায়ের শট আটকিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। এরপর ওয়াজদি ক্যাচিরদার ক্রস থেকে ওয়াহবি খাজরির শট ধরে ফেলেন রায়ান।
তিউনিশিয়া সমতায় ফেরার শেষ সুযোগটি পেয়েছিল ম্যাচের যোগকরা সময়ে। এসময় অস্ট্রেলিয়ার গোলপোস্টের সামনে জটলা সৃষ্টি হলে এর পা, ওর পা থেকে বল বেশ কিছু সময় ছিল ছোট বক্সের সামনে। তিউনিশিয়ার দুই খেলোয়াড় ওয়াহবি খাজরি ও ফেরজানি সাসি ছিলেন সেখানে। কিন্তু কাজের কাজটি কেউ করতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত হারের গ্লানি নিয়েই মাঠ ছাড়ে তিউনিশিয়া। ম্যাচ জিতে দুই খেলায় ৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ ষোলতে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রাখলো অস্ট্রেলিয়া। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেয়ে সবার শেষে তিউনিশিয়ার অবস্থান। তিউনিশিয়ার শেষ ম্যাচ ফ্রান্সের সঙ্গে এবং অস্ট্রেলিয়া খেলবে ডেনমার্কের বিপক্ষে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন