অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলে সেভাবে নিজেদের ছাপ রাখতে পারেনি। তবে ওশেনিয়া অঞ্চলের হয়েও, ফিফার নিয়ম অনুযায়ী এশিয়ার সঙ্গে বাছাই পর্ব খেলা শুরু করলে, বদলে গিয়েছে অধারাবাহিকতা। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের পরই বড় পরিবর্তন আসে সকারু দলে। অস্ট্রেলিয়া চলমান কাতার বিশ্বকাপে ডি গ্রুপে ডেনমার্ক, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও তিউনিশিয়ার বিপক্ষে লড়াই করছে। অন্যদিকে ডেনিশরা তুখোর ফর্ম নিয়ে খেলতে এসেছিল বিশ্বকাপ। তাদেরকে বলা হচ্ছিল আসরের ডার্ক হর্স। অথচ ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের দল বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৯টায় আল জানুব স্টেডিয়ামে যখন আস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে, তখন পরিষ্কারভাবে পিছিয়ে! অবাক হওয়ার মতই ব্যাপার। ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরেছে দুই দলই, তবে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ড্যানিশরা যেখানে গোলশূন্য ড্র করেছে সেখানে সকারুদের জয় ১-০ ব্যবধানে। এই মূল্যবান তিন পয়েন্টের বলেই গ্রাহাম আরনল্ডের দল।
অস্ট্রেলিয়া দলে পূর্বের কাহিল-ভিদুকা বা কিউলের মানের ফুটবলার এখন না থাকলেও ভেরোনায় খেলা মিডফিলদার হুস্তিচের সে পর্যায়ে যাওয়ার সামর্থ্য আছে। আজ রাতে এই মিডফিল্ডারের উপরেই ভরসা করবে সকারুরা। টানা পাঁচ বিশ্বকাপে খেলা দলটির এবারের সবচেয়ে বড় শক্তি মূলত একতা। শারিরীকভাবে সব সময়ই ভালো সুবিধা পায় দলটি। তাই আজকে ডেনমার্ককে বহু সমীকরণের সঙ্গে এই ব্যাপারতাও মাথায় রাখতে হবে। দলটির বস আরনল্ড মূলত ৪-৩-৩ ছকেই কৌশল সাজান।
অন্যদিকে ডেনমার্কের ম্যানেজার কাসপার হিউলমান্দ দলের দায়িত্ব নিয়েছেন সবে দুই বছর। তবে এর মাঝেই দেনমার্কের মানুষদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে এই ৫০ বছর বয়সী ম্যানেজার, তার জাদূর কাঠির ছোঁয়ায়। এই ট্যাকটেসিয়ানের অধীনে দেনিশরা এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে একটি ছাড়া বাকি সব ম্যাচই জেতে। প্রতিপক্ষেরর জালে বল পাঠেয় ৩০ বার। নেশন্স লিগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়েছিল দুইবার। শনিবার ফরাসিদের বিপক্ষে দারুন খেলেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কারণে হারতে হয়। তবে আজ আস্ট্রেলিয়াকে হারানর আগে দলের ইনজুরি সমস্যা একটা বিশাল জায়গা জুড়ে আছে। ম্যানেজার হিউলমান্দের জন্য তার চেয়ে বড় ঝামেলার নাম ফরোয়ার্ডদের গোলক্ষরা। তাইতো পূর্বের পাঁচ বিশ্বকাপের চারটিতে কমপক্ষে শেষ ষোলতে খেলা দলটির জন্য এবার নক-আউটে যাওয়াটা হয়ে দাড়িয়েছে বিশাল চ্যালেঞ্জ। মিডফিল্ডে নিজেদের কাজগুলো ঠিকই করছে দুই বিশ্বমানের মিডফিল্ডার হইবিয়ার-এরিকসন জুটি। তবে গোল যারা করবে, তারা যেন পায়ে শেকল পরে আছেন।
পূর্বে এই দুই দল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৪ বার মোকাবেলা করেছিল। তাতে ডেনিশদের জয় ২ বার, বিপরীতে সকারুরা ১টি ম্যাচ জেতে। অপর ম্যাচটি ড্র হয়, আর সেটি ছিল রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত সবশেষ বিশ্বকাপের ম্যাচ। গ্রুপ ডিতে দুই রাউন্ড শেষে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে এখন ফ্রান্স। অস্ট্রেলিয়া ১ জয় ও হারে যোগার করেছে ৩ পয়েন্ট। অন্যদিকে ডেনমার্ক ও তিউনিশিয়া তাদের মুখোমুখি লড়াই ড্র হওয়ার সুবাদে সংগ্রহ একটি করে পয়েন্ট। এই দুই দলই তাদের অপর ম্যাচে ১ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ হারে। সুতরাং এরিকসনদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার জন্য জয়ই যথেষ্ঠ নয়, খেয়াল রাখতে হবে গোল ব্যবধান যেনো তিউনিশিয়া অপেক্ষা বেশি থাকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন