গতপরশু রাতে কাতারের আইকনিক লুসাইল স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হারায় আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে ড্র হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে কোনো গোল না হলে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয় ম্যাচটি। তবে জয় পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনা রেফারিং নিয়ে। এ ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়ে ১৮টি কার্ড ব্যবহার করেছেন আন্তনিও মাতেউ লাহোজ। ১৭টি হলুদ ও একটি লাল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা নতুন রেকর্ড। হলুদ কার্ডের আগের রেকর্ডটির সঙ্গেও ছিল ডাচরা। ২০০৬ সালে পর্তুগাল ও নেদারল্যান্ডস ম্যাচে ১৬টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি। আর পুরো ম্যাচে ৪৮ বার ফাউলের জন্য বাঁশি বাজিয়েছেন তিনি।
এই সেই স্প্যানিশ রেফারি যার নাম শুনলেই আঁতকে ওঠে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। বিতর্কিত অনেক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন এই রেফারি। কাতালান ক্লাবে ২০ বছরেরও বেশি সময় খেলার কারণে এই রেফারি সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। জানেন তার অনেক সতীর্থরাও। তাই ডাচদের বিপক্ষে এই রেফারির নাম জানার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলেন মেসিরা। ম্যাচ শেষে রেফারির কর্মকাণ্ড নিয়ে মেসি বলেছেন, ‘রেফারি সম্পর্কে আমি কিছু বলব না। কারণ সকলের সামনে যা বলব সেটা সত্যি হবে না। আমার মনে হয় ফিফার ভেবে দেখা প্রয়োজন, এ রকম ম্যাচে এই ধরনের রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত কি না। এমন রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত নয়, যে কাজটার যোগ্য নয়।’
মূলত মাতেউকে রেফারির দায়িত্ব দেওয়ায় পর থেকেই এমন কিছুর ভয় পাচ্ছিলেন মেসি, ‘রেফারির নাম দেখে ম্যাচ শুরুর আগেই আমরা ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই ধরনের রেফারিকে দায়িত্ব দেওয়াই উচিত নয়। রেফারির পক্ষপাতমূলক আচরণ তুলে ধরে আরও বলেন, ‘আমাদের খেলা খুব ভালো ছিল না, এবং তারপর রেফারি এটিকে অতিরিক্ত সময়ে পাঠিয়েছিলেন। তিনি সবসময় আমাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। শেষ নাটকে ওটা ফাউলই হয়নি। তারা সমতায় আসার পর আমি খুব রাগান্বিত হয়ে গিয়েছিলাম।’
এদিন বিপজ্জনক ফাউলের কারণে হলুদ কার্ড তো দেখিয়েছেনই মাতেউ, এমনকি তার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলেও দেখিয়েছেন হলুদ কার্ড। বাদ যাননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি ও সহকারী কোচ ওয়াল্টার স্যামুয়েলও। তবে দলটির বড় দুঃসংবাদ দুই ফুলব্যাক মার্কাস আকুনিয়া ও গনসালো মন্তিয়েল হলুদ কার্ড দেখায় খেলতে পারবেন না সেমি-ফাইনালে। আর তাতেই তার প্রতি পক্ষপাততুষ্টের অভিযোগ করেছেন ম্যাচের আরেক নায়ক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের ভাষ্যে, ‘লাহোজ (রেফারী) পক্ষপাতী ছিলেন। এটা অত্যান্ত কঠিন একটি ম্যাচ ছিল। তারপরও মাঠের খেলা দিয়ে আমরা ম্যাচটিকে নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। আমরা ২-০ ব্যবধানে এগিয়েও গিয়েছিলাম। এরপরই তিনি সবকিছু নেদারল্যান্ডসের পক্ষে সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন।’
তারপরও নিজেদের প্রতি পূর্ণ আস্থা নিয়েই ম্যাচটি জিততে পারায় স্বস্তি ঝরেছে তার কণ্ঠে, ‘কোনো কারণ ছাড়াই সে ১০ মিনিট স্টপেজ টাইম দিয়েছে, যা অবিশ্বাস্য। সে বিপজ্জনক ডি-বক্সে ঠিক বাইরেই তিন থেকে চারবার ফ্রি কিক দিয়েছে, যার প্রতিবারের কোনো ভিত্তি আমরা খুঁজে পাই না। এসব কিছ্ ুতার পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ দেয়। তিনি চাইছিলেন নেদারল্যান্ডস জিতুক। অমরা তার মতো রেফারি আর চাই না। সে কোনো কাজেরই না!’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন