স্টাফ রিপোর্টার : নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, বুড়িগঙ্গা নদী তার আদিরূপে ফিরে যাবে। এ জন্য নদীর পাশে যেসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে তা গুঁড়িয়ে ফেলা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, এই বুড়িগঙ্গা একসময় ছিল ঢাকার সৌন্দর্য। কিন্তু বিভিন্ন সময় নদী ভরাট করে এক শ্রেণির অসাধু লোক স্থাপনা গড়ে তোলে। এ কারণে নদীর আদি চ্যানেল হারিয়ে গেছে। নদীকে চেনা যায় না। তবে এ চ্যানেল উদ্ধারে সরকার বদ্ধপরিকর। স্থপনা গুঁড়িয়ে পরিকল্পিত উপায়ে নদীর নানা সংস্কার কাজও চলছে। দখলদারদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, নদীর ঘাটসংলগ্ন কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। এরপরও কেউ যদি এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে তাকে আইনে সোপর্দ করা হবে।
বুড়িগঙ্গা হলো রাজধানী ঢাকার প্রাণ। আর এই বুড়িগঙ্গা বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে বলে মন্তব্য করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, বিভিন্ন পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জরিপে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা হচ্ছে বসবাসের সবচেয়ে অনুপযোগী একটি শহর। যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বুড়িগঙ্গার আশপাশে বসবাসরত বাসিন্দারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই আমাদের এই বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে হবে। তবে এই বুড়িগঙ্গা তথা আদি চ্যানেলকে বাঁচানো শুধু মন্ত্রী, মেয়র কিংবা বিআইডবিøউটিসি’র দায়িত্ব নয়। এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
তিনি আরো বলেন, বিগত ২০-২৫ বছর ধরে এই নদীটিকে বাঁচানোর জন্য আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু জানিনা এটা এখন অবধি কেন বাঁচানো যাচ্ছে না। তবে এই জন্য জনগণের সচেতনতারও অভাব রয়েছে। কেননা এই বুড়িগঙ্গার আশপাশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কল-কারখানা যার অধিকাংশ ময়লা ও আবর্জনা এই নদীতে ফেলা হচ্ছে। তাই এখন থেকে যদি কোনো ময়লা-আবর্জনা বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনেক জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে নদী দখলের অভিযোগ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমার কাছে অনেক জনপ্রতিনিধিদের নদী দখলের অভিযোগ রয়েছে। যদি সেই অভিযোগ সত্য হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেননা আইন চলবে তার নিজস্ব গতিতে এখানে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বেলাল বলেন, বুড়িগঙ্গার সন্নিকট থেকে খুব শিগগিরই চামড়া শিল্প স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। ফলে এখানকার পানি আবার মানুষ আগের ন্যায় ব্যবহার করতে পারবে। তাই আমাদের সকলকে আদি চ্যানেল রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। শুধু তাই নয়, বুড়িগঙ্গাসহ আশপাশের আরো ৩টি নদী রক্ষায়ও আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন