রাজধানীর নামি প্রতিষ্ঠান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা। তারা বলছেন, এই অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে লুটেপুটে খাচ্ছে। তাকে দ্রুত না সরালে তার অনিয়ম ও দুর্নীতিতে স্কুলটি ধবংস হয়ে যাবে। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় অভিভাবক ফোরামের সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
অভিভাবকরা জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। এর বার্ষিক আয়ও শতকোটি টাকারও বেশি। বিদ্যালয়টির আর্থিক দুর্নীতির খতিয়ান এভারেস্ট সমান। আয় ব্যয়ের কোন হিসাব নেই। আয়ের বেশিরভাগ টাকাই ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষও তার অনুসারীরা। আইডি কার্ড ফি, স্পোর্টস ফি, পানি-গ্যাস ফি, মিলাদ ফি, বিদ্যুৎ ফি দরিদ্র তহবিলের খাতে টাকা নেয়া হয়। অথচ শিক্ষার্থীরা এর কোনটিই পায় না। কোন কোন শাখা প্রধান বিদ্যালয়ে বসে কোচিং বাণিজ্য চালাচ্ছেন। অভিভাবকদের সামান্যতম অধিকার বিদ্যালয়টিতে নেই। কোন অভিযোগ নিয়ে গেলে স্থানীয় এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের ভয় দেখান এই অধ্যক্ষ।
অভিভাবকরা জানান, ঢাকা বোর্ড ও শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তে মো. ফরহাদ হোসেনের নিয়োগ অবৈধ হলেও এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। তারা বলেন, বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি অধ্যক্ষ পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু আদালত অবমাননা করে তিনি অধ্যক্ষ পদ জোর করে দখল করে আছেন।
অভিভাবকরা জানান, স্থানীয় এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারকে ভুল বুঝিয়ে তার নামে ও তার মেয়ের নামে, আরো কয়েকজনের নামে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজকে ট্রাস্ট করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু বিদ্যালয়টির এমপিও চালু থাকা, জমির মালিক সরকার, নুর মোহাম্মদ মিয়া এবং লায়লা বেগম হওয়াতে তাদের সে অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। কিন্তু এ কে এম দেলোয়ার হোসেন নামের জনৈক ব্যক্তি বিদ্যালয়ে কয়েকটি সিলিং ফ্যান দান করে বিদ্যালয়টিকে নিজের নামে ট্রাস্ট করার জন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে মিমাংসিত বিষয়টি আবার আমাদের গোচরে আসে। আমরা সেই অপচেষ্টা, অবৈধভাবে সরকারি সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নেয়ার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি।
১৯৮৩ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয় । শিক্ষকরা সে থেকে আজ অবদি এমপিওর টাকা পেয়ে আসছেন। কিন্তু ফরহাদ হোসেন শিক্ষকদের এমপিও শিটে সই করা বন্ধ করে দেন ২০১৬ সালে। ফলে শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হলেও সরকারি কোন ভাতা তুলতে পারেন না। শিক্ষকদের কাছ থেকে জোর করে এমপিও প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়েছে। বিয়ষটি সরকারি তদন্তে প্রমানিত হয়েছে।
পুন:ভর্তি ফি আদায়ে সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নেয়া হচ্ছে, ফরহাদ হোসের ক্ষমতায় বসার পর ৪ শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যার প্রতিটি নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে। নিয়ম ভেঙে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অভিভাবকরা বলেন, আমরা দেশ সেরা এই প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবদের পক্ষে সদস্য সচিব লিয়াকত আলী, সদস্য একলিমুর রেজা কোরাইশ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন