স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : ঢাকার আশুলিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সব পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজে যোগদান করছেন। কোথাও অসন্তোষের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পরে কারখানাগুলো খুলে দেয়ায় শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়লে গত মঙ্গলবার বিজিএমইএ সংবাদ সম্মেলন করে ৫৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
এ পরিস্থিতিতে রোববার সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও ৩০টি শ্রমিক সংগঠনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সোমবার থেকে আবারও বন্ধ কারখানাগুলো খোলার নির্দেশ দেন।
গতকাল সকালে কারখানাগুলো খুলে দিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান জানান, সকাল থেকে কারখানাগুলো খুলে দেয়ার পরে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে উৎপাদন শুরু করেছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া র্যাব, বিজিবি টহল অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো জানান, শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ২টি ও কারখানা কর্তৃপক্ষ ৮টি মামলা করেছে। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে বিশৃঙ্খলা, ভাংচুর ও নাশকতা সৃষ্টি করেছে এমন ১৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত শ্রমিক নেতা, সাংবাদিকসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শ্রমিক বরখাস্তের বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, সাময়িক বরখাস্তকৃত কোনো শ্রমিক যদি মনে করে তার উপর অন্যায় বা অবিচার করা হয়েছে তাহলে সে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর দরখাস্ত করলে আমরা তদন্ত করে মালিকপক্ষকে বলবো কাজে পুনর্বহাল করার জন্য। আর সত্যি সত্যি যদি কেউ ‘কালপ্রিট’ থাকে বা আন্দোলনের ইন্ধনদাতা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে শ্রমিকদের আন্দোলন উস্কে দেয়ার অভিযোগে এ পর্যন্ত হা-মীম গ্রুপ, ফাউন্টেন গার্মেন্টস ও উন্ডি এ্যাপারেস থেকে মোট ৩৪৭ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা কারখানার সামনে আসলেও তারা কারখানায় প্রবেশ করতে না পেরে বাড়ি ফিরে যান।
সরেজমিনে ঘুরে গতকাল সকালে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল, জামগড়া, নরসিংহপুর ও এর আশপাশের সকল পোশাক কারখানা খোলা পাওয়া যায়। উৎসবমুখর পরিবেশে শ্রমিকদের কাজে যোগদান করতেও দেখা গেছে।
শিল্প পুলিশ-১ আশুলিয়া জোনের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সব পোশাক কারখানা খোলার পর শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজে যোগ দিয়েছে। কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তেষের ঘটনা ঘটেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন