রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

প্রথম অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : দেশের ফুটবলে পেশাদারিত্ব আসার পর এর আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের আটটি আসর শেষ হয়েছে। নবমটি সমাপ্তির পথে। আজই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে এটি। ইতোমধ্যে জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (জেবি বিপিএল) চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারণ হয়ে গেছে। গত সোমবার উত্তর বারিধারা ক্লাবকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই লিগের নবম শিরোপা ঘরে তুলে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এর আগে তারা বিপিএলের টানা চারবারের চ্যাম্পিয়ন হলেও অপরাজিত শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি। কিন্তু এবার তা করে দেখিয়েছে ঢাকার অভিজাত পাড়ার দলটি। জেবি বিপিএলে নিজেদের শেষ ম্যাচে রহমতগঞ্জ এমএফএসকে হারিয়ে দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে অপরাজিত থেকেই পঞ্চম শিরোপা ঘরে তুলেছে ঢাকা আবাহনী। গতকাল বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আবাহনী ৩-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জকে। বিজয়ী দলের স্থানীয় ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন দু’টি ও ইংলিশ ফরোয়ার্ড জনাথন ডেভিড একটি করে গোল করেন। রহমতগঞ্জের পক্ষে সান্তনাসূচক গোলটি করেন কঙ্গোর ফরোয়ার্ড সিও জোনাপিও। এই জয়ে ২২ ম্যাচে ৫২ পয়েন্ট পেয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো ঢাকা আবাহনী। সমান ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ষষ্ঠস্থানে থেকে লিগ শেষ করল রহমতগঞ্জ।
আগের ম্যাচেই শিরোপা নিশ্চিত হয়। শুধু উৎসবটাই ছিল বাকি। সেটাও করার উপলক্ষে পেলেন আবাহনী সমর্থক, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। কাল রহমতগঞ্জের বিপক্ষে লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয়ের পর উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো আবাহনী। রেফারির বাঁশি বাঁজার সঙ্গে সঙ্গেই ডাগআউটে থাকা ফুটবলাররা উল্লাসে মেতে ওঠেন। আবাহনী সমর্থকগোষ্ঠীর সদস্যরা গ্যালারি থেকে হুড়মুড় করে মাঠে ঢুকে পড়েন। দলের অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান, ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু এবং ফুটবলারদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয় সমর্থকগোষ্ঠী। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেন তারা।
তিন বছর পর ফের লিগ শিরোপা পেল আবাহনী। তাই উৎসবটা ছিল ভিন্ন। ‘চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে অভিনন্দন-এমন লেখা ব্যানার সম্বলিত ছয়টি সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে স্টেডিয়াম এলাকায় আসলেন ঢাকা আবাহনীর ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষে মাঠে স্টেজ করেই দেয়া হয় চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। প্রধান অতিথি থেকে আবাহনীর অধিনায়ক ও ম্যানেজারের হাতে সেই কাক্সিক্ষত ট্রফি তুলে দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। এ সময় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ উপস্থিত ছিলেন।
নিজেদের শেষ ম্যাচের শুরুটা কিন্তু দুর্দান্ত ছিল রহমতগঞ্জের। প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় তারা। ম্যাচের ২২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে রহমতগঞ্জের কঙ্গোর ফরোয়ার্ড সিও জোনাপিওর চমৎকার হেডে গোল করেন (১-০)। পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে চিরচেনা রূপে ফেরে আবাহনী। ৪৯ মিনিটে সমতা আনে তারা। এসময় প্রায় মাঝ মাঠ থেকে তপু বর্মনের ফ্রি কিক বক্সে হেড দিয়ে জীবনের উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়ে দেন আবাহনীর ইংলিশ ফরোয়ার্ড জনাথন। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি জীবন। বাঁমপায়ের শটে বল জালে জড়ান তিনি (১-১)। এগারো মিনিট পর আবারও গোল পায় আবাহনী। এবারো সেই জীবন। ৬০ মিনিটে ডান দিক থেকে জনাথনের বাড়িয়ে দেয়া বলে দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করেন জীবন (২-১)। জীবনের কাছ থেকে বল পেয়ে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে (৯০+৩ মিনিট) রহমতগঞ্জের কফিনে শেষ পেরেক ঠুঁকে দেন জনাথন (৩-১)। তার এ গোলেই সহজ জয়ে অপরাজিত শিরোপা নিশ্চিত হয় ঢাকা আবাহনীর।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর পাঁচ শিরোপার অন্যতম সঙ্গী বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সাল। যিনি দীর্ঘদিন এ ক্লাবেই খেলেছেন। এবারের প্রিমিয়ার লিগে সেরা একাদশেই ছিলেন ওয়ালী। দলের হয়ে পঞ্চম শিরোপা জয় করে উচ্ছাসিত এই ডিফেন্ডার। ওয়ালী বলেন, ‘দেশে পেশাদার ফুটবল চালু হওয়ার পর আবাহনী যে পাঁচ শিরোপা জিতেছে তার সবক’টিরই অংশীদার হওয়ায় আমি সৌভাগ্যবান। খুব ভালো লাগছে এবারের শিরোপা জিতে। নিজের সেরাটা মাঠে ঢেলে দেয়ার পাশাপাশি সিনিয়র ফুটবলার হিসেবে পেছন থেকে দলকে পরিচালনাও করতে পেরেছি এবার।’
সন্ধ্যার ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী ২-১ গোলে হারায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন