সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

পাওয়ার প্লে-তে শেষ বাংলাদেশ

| প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ : ১৪১/৮ (২০ ওভারে)
নিউজিল্যান্ড : ১৪৩/৪ (১৮ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে পরাজিত।
শামীম চৌধুরী : সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ড পরাশক্তি। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তির তারতম্য অতীতের চার ম্যাচে দেখেছে বিশ্ব। চারটি ম্যাচে হারই ছিল বড় ব্যবধানে। সেই অতীত মুছে নতুন ইতিহাস রচনা করতে পারেনি বাংলাদেশ। নেলসনে টি-২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়ান ভার্সেস টেন-এর লড়াইটা অসমই ছিল। তবে আগের চারটি ম্যাচের তুলনায় এদিন বাংলাদেশ লড়েছে ভালো। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ইতোপূর্বের ওয়ানডে ম্যাচে (২০১০ সালে) প্রথমে ব্যাট করে ৭৮ রানে অলআউট হওয়া কিংবা কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে ৯ মাস আগে চেজ করতে নেমে ৭০ রানে অল আউটের মতো দুঃস্বপ্ন তাড়িয়ে বেড়ায়নি গতকাল। টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে ছয় উইকেটে।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লের ছয় ওভারই দু’দলের ব্যবধান করেছে নির্নীত। বাংলাদেশের স্কোর যেখানে প্রথম ছয় ওভার শেষে ৩৪/৪, সেখানে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৪৩/২। ওয়ানডে সিরিজের মতোই নিউজিল্যান্ড বোলারদের শর্ট বলে খেলতে এদিন পর্যুদস্ত বাংলাদেশ টপ অর্ডাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হেনরির সুইং ডেলিভারিতে অনন্যোপায় হয়ে উইকেটের পেছনে ইমরুল কায়েসের (০) ক্যাচ দিয়ে আসা দিয়ে শুরু উইকেটের মিছিল। সেট হওয়ার আগে চতুর্থ ওভারে কিউই ডেব্যুটেন্ট পেস বোলার হুইলারের শর্ট বলে স্কোয়ার লেগে তামীমের (১১) ক্যাচ দিয়ে আসায় নেলসনের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখেছে মাশরাফিরা। এসেই হেনরিকে শর্ট বলে বাউন্ডারিতে প্রথম স্কোরিং শট নিয়ে, সেই হেনরিকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কায় মাতিয়ে নিজেকে সংযত রাখতে পারেননি সাব্বির। ওয়ানডে সিরিজে ভয়ঙ্কর ফার্গুসন টি-২০ অভিষেকেও ছড়িয়েছেন সেই রূপ। তার প্রথম ডেলিভারিতে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে এসেছেন সাব্বির ( ১৬),১৪৮ কিলোমিটার গতির পরের ডেলিভারিতে গালিতে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন সৌম্য। টি-২০ অভিষেকে তার বোলিংই (৩/৩২) বাংলাদেশকে আরো একবার ভুগিয়েছে।
এই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা কাটিয়েছে বাংলাদেশ সাকিব-মাহামুদুল্লাহর ৩৭ রানের পার্টনারশিপে। ডেব্যুটেন্ট গ্র্যান্ডহোমকে শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে সাকিবের ক্যাচটি ছিল আত্মহত্যারই সামিল ( ১৪)। স্যান্টনার এবং ফার্গুসনকে দু’টি ছক্কায় টি-২০ আমেজের ব্যাটিং উপহার দিয়ে বাঁ হাতি স্পিনার স্যান্টনারকে কাভার পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে (২০) মোসাদ্দেকের ফিরে আসায় প্রত্যাশিত স্কোরে দেয়াল তৈরি হয়েছে। এক প্রান্তে অবিচল ছিলেন মাহামুদুল্লাহ। ওয়ানডে সিরিজে ০, ১, ৩ এ ব্যাটিংয়ের সুনাম বিসর্জন দেয়া মাহামুল্লাহ ফিরেছেন চেনা রূপে। চার বছর পর টি-২০ তে দেখা পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। উইকেটে টিকে থেকে রান করা সম্ভবÑ ৪৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসে সে দীক্ষাটাই দিয়েছেন টিমমেট ব্যাটসম্যানদের। যে ইনিংসে তিনটি ছক্কার দু’টিই মেরেছেন হেনরিকে। মাহামুদুল্লাহ এক অ্যান্ড আগলে ধরে না থাকলে লড়াইয়ের পুঁজিটাই যে পেতো না বাংলাদেশ।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে রুবেলের প্রত্যাবর্তন টি-২০ ম্যাচে সাকিবের অবিশ্বাস্য ক্যাচে ব্রæমের আউট ( ৬), কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুরের দ্বিতীয় বলে কলিন মুনরোর উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আসা ( ০), সাকিবের বলে লং অফে ডেঞ্জারম্যান কোরে এন্ডারসনকে ফিরিয়ে দেয়া (১৩) কিংবা মিড অন থেকে সৌম্যের থ্রো তে বল পেয়ে ব্রæসকে রান আউটে মাশরাফির ফিরিয়ে দেয়ায় লড়াইটা একপর্যায়ে ছিল সমান সমান। দারুণ ফিল্ডিং প্রদর্শনীর দিনে শেষ ৫৯ বলে ৮১ রানের টার্গেটটা কঠিন হয়েছে ফিল্ডিং পজিশনে সৌম্য, ইমরুলের এগিয়ে যাওয়ায়। অপেক্ষাকৃত ছোট মাঠে ৪৮ রানের মাথায় কেন উইলিয়ামসের দেয়া ক্যাচটি ছক্কায় পরিণত ডিপ মিড উইকেটে সৌম্যের ভুলে। ৬১ রানের মাথায় বোনাস ছক্কা পেয়েছেন কেন উইলিয়াসন ডিপ এক্সট্রা কভারের ফিল্ডার ইমরুল ঠিক পজিশনে না থাকায়। পঞ্চম জুটির অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানে ১২ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে এক অ্যান্ড আগলে রেখে ৯৫ রানের নটআউট ইনিংসে জিতিয়েছেন দলকে কিউই অধিনায়ক, গতকাল সেখানে উপহার দিয়েছেন ম্যাচ উইনিং ৭৩ রানের ইনিংস। অভিষেকে দ্যুতি ছড়ানো ব্যাটিং করে ( ২২ বলে ৪১) তাকে সঙ্গ দিয়েছেন গ্র্যান্ডহোম। তবে এই ম্যাচেও বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে কিউই ব্যাটসম্যানরা সমীহ করেছে মুস্তাফিজুরকে (১/২১)। ২৪ বলের ৯টিই তার ডট, খেয়েছেন মাত্র একটি বাউন্ডারিÑ প্রথম স্পেলটি ছিল এক কথায় অসাধারণ (২-০-১১-১)। দু’দলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ডট বলের সংখ্যাও। নিউজিল্যান্ডের ১০৮ বলের ইনিংসে ডট বলের সংখ্যা যেখানে ৩২টি, সেখানে ১২০ বলের ইনিংসে বাংলাদেশের ডট বলের সংখ্যা ৫৩টি!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন