স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর নন্দীপাড়ার ত্রিমোহনী খাল উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা ও ঢাকা জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। নন্দীপাড়া ব্রিজ থেকে শুরু হওয়া এ উদ্ধার অভিযানে কয়েকটি বিপনি বিতানসহ দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা রয়েছে। এ সময় স্থানীয়রা উচ্ছেদ অভিযানে অংশগ্রহণ ও উচ্ছেদ অভিযানের পক্ষে সেøাগান দিতে দেখা গেছে।
ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন নন্দীপাড়া খাল এলাকায় উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে খাল উদ্ধার অভিযানের ঘোষণা দেন। এসময় মেয়র বলেন, নন্দিপাড়ার এ খাল উদ্ধারের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার খাল উদ্ধার অভিযান শুরু হলো। যেখানেই অবৈধ স্থাপনা রয়েছে, সরকার কিংবা জনগণের সম্পত্তির অবৈধ দখল রয়েছে সেখানেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
যতক্ষণ পর্যন্ত খাল পূর্বের অবস্থায় ফিরে না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চলবে বলে ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ স্থাপনার মালিক কোনো দলের বা কোথাকার ক্ষমতাবান লোক, তা আমরা দেখব না। খালকে দখলমুক্ত করাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে কোনোপ্রকার মাস্তানি, দখলবাজি চলবে না। রাজধানীতে পানিবদ্ধতার অন্যতম কারণ খাল দখল। এ খালগুলো রক্ষা করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন, আমরা আজকে উদ্ধার অভিযান শেষে সাতদিন পর আবার এসে পরিদর্শন করব। এর মধ্যে কেউ যদি আবার অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরি করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় মেয়র এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান এবং উচ্ছেদ বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্থিত জনতা একযোগে খালের ওপর অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য মেয়রকে সমর্থন দেন। পরে তারা উচ্ছেদের পক্ষে সেøাগান দিতে থাকেন। এরপরই ডিএসসিসির বুলডোজার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।
সরেজমিন দেখা যায়, একদিক দিয়ে বুলডোজার অবৈধ দোকান গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে অবৈধ দখলদারের যে যেভাবে পারছে তাদের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বরাদ্ধ দেয়ায় খালের পাড়ে গড়ে তোলা মাদারটেক-নন্দীপাড়া বাণিজ্যিক বিপনি ভাঙার বিষয়ে সংশয় ছিলো। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সময়ে মার্কেটটি নির্মাণ করায় এটি স্থানীয়ভাবে এরশাদ মার্কেট নামে পরিচিত। বিষয়টি ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে মেয়র সাঈদ খোকনকে জানানো হলে তিনি ভাঙার নির্দেশ দেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে দোকানিরা তাদের মালামাল দ্রæত সরাতে থাকে। এর মধ্যেই শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এতে বেশকিছু মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুযোগ বুঝে এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত কিছু মালামাল লুটপাটও করে নিয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা অভিযান চালিয়ে প্রায় সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তবে খাল পাড়ে থাকা পাঞ্জেগানা মসজিদটি না ভেঙে এক মাস সময় দেয়া হয় নিজেদের উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার জন্য। উচ্ছেদ অভিযানকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। ডিএসনির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মোহাম্মদ নাজমুস শোয়েব ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন