শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

মহিউদ্দিন আহমেদ স্মরণ সভায় বক্তারা ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ

| প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের রাজনীতিতে ক্রান্তিকাল চলছে। আমরা যদি মহিউদ্দিন আহমেদের মতো বরেণ্য নতার আদর্শগুলো নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে আমাদের জন্যই উপকার হবে। যদি মহিউদ্দিন ভাই থাকতেন, তাহলে বলতেন ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ! গতকাল মহিউদ্দিন আহমেদের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। এই আলোচনা সভার আয়োজন করে মহিউদ্দিন আহমেদ স্মৃতি সংসদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, মহিউদ্দিন আহমেদ যে আদর্শ ও নীতি নিয়ে রাজনীতি করেছেন, তা একদিন বাস্তবায়িত হবে। অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন আহমেদের লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহিউদ্দিন ভাই আমার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে তুমি করে ডাকতেন। তিনি ছিলেন জাতির জনকের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও কাছের বন্ধু। মহিউদ্দিন ভাইকে খুব মনে পড়ে, তার স্নেহ অনেক মিস করি।’ এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ধানমন্ডির বাসভবনে আমরা অনেক সভায় বসেছিলাম। ওখানে বসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ৬ ডিসেম্বর যখন এরশাদ সরকারের পতন হয়, আমরা ওখানে বসেই তত্তবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘এদেশের রাজনৈতিক বিবর্তনের সঙ্গে মহিউদ্দিন ভাইয়ের রাজনৈতিক বিবর্তনও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ছাত্রকর্মী হিসেবে একটু হলেও সান্নিধ্য পেয়েছিলাম তার। মানুষকে কাছে টানার অসাধারণ এক দক্ষতা ছিল মহিউদ্দিন ভাইয়ের। আমরা যেমন বাংলাদেশে পেতে চাই, তাতে মহিউদ্দিন ভাইয়ের মতো নেতা খুব প্রয়োজন ছিল। আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারা এগিয়ে নিতে মহিউদ্দিন ভাইয়ের মতো নেতাকে আমাদের খুব দরকার ছিল। তার মতো নেতা আজকাল খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন।’ এই স্মরণসভা রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করতে পারলে ভালো লাগতো জানিয়ে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এই আলোচনা নতুন প্রজন্মের উপকারে আসবে। তার এই বিষয়গুলো শুধু শিক্ষণীয় নয়, ভেতরে ধারণও করতে হবে। খ্যাতিমানদের সবসময়ই আলোচনায় রাখা উচিত।’ সাংবাদিক আবেদ খান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের রাজনীতিতে ক্রান্তিকাল চলছে, আমরা যদি এই বরেণ্য নেতার আদর্শগুলো নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে আমাদের জন্যই উপকার হবে। আমি একজন লেখক হিসেবে রাজনীতির বিবর্তন দেখি। আর ভাবি আজ যদি মহিউদ্দিন ভাই থাকতেন, তাহলে বলতেন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াও!’
অতপর কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘চাষাভুষার কাব্য’ থেকে নেয়া ‘প্রলেতারিয়াত’ কবিতা আবৃত্তি করে শোনান ডালিয়া আহমেদ। ‘যতক্ষণ তুমি শ্রমিকের পাশে আছো, আমি আছি তোমারই পাশে’- এই কবিতার মাধ্যমে মহিউদ্দিন আহম্মেদকে স্মরণ করা হয়।
মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ ১৯২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি মঠবাড়িয়ার গুলিসাখালী সম্ভ্রান্ত মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৭ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। তিনি পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনে চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনসহ ১৯৭৩, ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একজন সুদক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবেও সুনাম ছিল তার। স্থানীয়দের কাছে ‘পান্না মিয়া’ এবং দেশবাসীর কাছে ‘বাকশাল মহিউদ্দিন’ নামে সর্বাধিক পরিচিত জননন্দিত এই নেতা রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর ছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৫ আগস্টের পর আ.লীগের দুঃসময়কালে মহিউদ্দিন আহমেদ কেন্দ্রীয় আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি বাকশাল চেয়ারম্যান হন। অত:পর বাকশাল বিলুপ্ত করে আ.লীগের মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন