শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সিলেটে আবাসন ব্যবসায় ধস

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফয়সাল আমীন সিলেট থেকে : সিলেটে আবাসন ব্যবসার সেই দিন আর এখন নেই। ধস নেমেছে এই খাতে। বছর কয়েক আগেও এই ব্যবসার ব্যাপক সম্ভাবনা ছিল। এখন অনেক আবাসন প্রকল্পের সাইন বোর্ড তুলে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ফ্ল্যাট বিক্রিও শুন্যের কোটায়। প্রবাসীরা তাদের বিনিয়োগ তুলে নেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। বিএনপি-জোট সরকারের আমলে প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেট অঞ্চলে ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরীসহ আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে আসেন অনেক ব্যবসায়ী। এর সিংহভাগই ছিলেন প্রবাসী। হঠাৎ করে গজিয়ে উঠা এই ব্যবসায় এক সময় দেখা দেয় রমরমা অবস্থা। বর্তমানে আর এই ব্যবসার সেই দিন নেই। সিলেটে গড়ে উঠা শাতাধিক আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের অর্ধেক বন্ধ হয়ে গেছে। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ-ছয় বছর আগেও যেসব ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ছিল ৫ হাজার ২০০ টাকা, সেসব ফ্ল্যাট এখন ৩ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না। আবার প্রতি বর্গফুট সাড়ে ৪ হাজার টাকার ফ্ল্যাট তিন হাজার টাকা বর্গফুট ধরেও ছাড়া যাচ্ছে না। একই সময়ে আবাসন প্রকল্পের প্লটের দামও অনেক কমে গেছে। অন্যদিকে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীদের বেশি বিপাকে ফেলেছে। ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে কখনো চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ দিতে হচ্ছে তাদের। সরকারিভাবে জমির দাম অতিরিক্ত নির্ধারণের কারণেও সংকটে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া সরকারিভাবে দাম বেশি নির্ধারণ করায় দলিল করতে হচ্ছে বেশি টাকা দাম ধরে। ফলে জমির দাম পড়ছে বেশি। এরমধ্যে ক্রেতা নেই। ডেভেলপারদের জমি দিয়ে অনেক জমির মালিকও ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিক্রি না থাকায় ডেভেলপাররাও কাজ বন্ধ করে বসে আছেন। ফলে ডেভেলপারের কাছে জমি দিয়ে মূল মালিককে বছরের পর বছর ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। বিপাকে রয়েছে ব্যাংকগুলোও। ঋণের টাকা তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। সিলেট অ্যাপার্টমেন্ট অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট গ্রæপ (সারেগ) এর সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ মুনতাসির আলী জানান, সিলেটে শুরুর দিকে শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। পরে অনেক প্রতিষ্ঠানই সদস্য পদ নবায়ন করেনি। বর্তমানে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৮টি। মুসতাসির আলী জানান, ইউরোপ কেন্দ্রিক অনেক ব্যবসায়ী ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বিনিয়োগ করলেও পরে লাভ এর মুখ না দেখায় হতাশ হয়ে পড়েন। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছেন। ফলে আবাসন ব্যবসায় কিছুটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ জানান, আবাসন ব্যবসায় মন্দাভাবের জন্য প্রবাসী বিনিয়োগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি সিলেটে শিল্প-কারখানার প্রসার না হওয়া অন্যতম কারন। সরকারিভাবে জমির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা, ব্যাংকঋণকে আরো সহজ করা, প্রবাসীদের এ খাতে বিনিয়োগে আস্থা ফিরিয়ে আনা, সিলেট অঞ্চলে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা স্থাপনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন