শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কার্তিকেই রস সংগ্রহে প্রস্তুত দুপচাঁচিয়ার গাছিরা

| প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক : দুপচাঁচিয়া উপজেলার গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে রস সংগ্রহে গ্রামাঞ্চলের গাছীরা ব্যস্ত সময় পার করছে।
উপজেলার ২টি পৌরসভা সহ ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার গাছিরা ইতি মধ্যে খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তি করে গাছ নিয়েছে। তারা এখন এইসব মধুবৃক্ষ থেকে রস অহরনের প্রস্তুতিতে কাজ শুরু করেছে। যদিও আগের মত শ-শ খেজুর গাছের সারি আর দেখা যায় না। এর পরও যে গাছগুলো আছে শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরের রস অহরনের জন্য এলকার গাছিরা সেই গাছগুলোই প্রস্তুত করতে শুরু করছে।
গাছিরা হাতে দা দিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে গাছের ডালপালা কেটে পরিষ্কার সহ নিপুন হাতে গাছের ছাল তোলা, চাঁছা ও নলি বসানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এর মাঝে অধিকাংশ গাছই প্রায় কাঁটা হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে গতকাল ৩ নভেম্বর শুক্রবার উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের বাঁকাদহ গ্রামের ওয়ারেছ আলী ফকিরের পুত্র গাছী বিশূ ফকির (৩৮) একান্ত এক সাক্ষাতকারে “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, বাংলা কার্তিক মাসে খেজুর গাছগুলোর মালিকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গাছ কাঁটা শুরু করেছে। অগ্রাহায়ন মাসে পুরোপুরি গাছগুলো কাঁটা শেষ করে শুরু হবে রস সংগ্রহের প্রতিযোগীতা। অগ্রাহায়ন পৌষ, মাঘ এই তিন মাস খেজুরের গাছগুলো থেকে রস অহরন আর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। গাছগুলো থেকে অহরনকৃত কিছু রস বাজারে বিক্রি সহ বেশী ভাগ রসই নিজ বাড়ীতেই আগুনে জ্বাল দিয়ে যে গুড় ও লালী তৈরি করে পরে তা বাজারে বিক্রি হবে। তনি আরও জানান, ইট ভাটায় খেজুর গাছের চাহিদা বেশী হওয়ায় এবং এ উপজেলায় ইট ভাটা আশংকা জনক বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের সাধারন মানুষ অভাবের তাড়নায় অবাদে তাদের গাছগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে।
এ ছাড়াও অনভিজ্ঞ গাছিরা গাছ কাঁটার সময় ভুল করায় অনেক গাছ মড়েও যাচ্ছে। তাই এখন আর আগের মত এ উপজেলায় খেজুর গাছ দেখা যায় না। ফলে এক সময় খেজুর রসের যে সমারোহ ছিল তা অনেকাংশে কমে গেছে। এক সময় শীতের এই সকালে রস বিক্রিতারা ভাঁড় বাশে হাঁড়ি কাধে নিয়ে খেজুরের রস বিক্রি করতো। কালের বিবর্তনে এখন আর সেই দৃশ্য আগের মত চোখে পড়ে না। শীতের সকালে গøাস ভড়ে খেজুরের রস খাওয়াই ছিল লোভনীয়।
এ ছাড়াও খেজুর রসের গুড় পাটালির চাহিদা এখনও রয়েছে। পুরো শীত নামার সাথে সাথেই প্রতিটি ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা-পুঠি আর পায়েস তৈরির ধুম পড়বে। বিনা খরচে বেড়ে উঠা এই মধুবৃক্ষ প্রতি বছর শীত মৌসুমে মানুষের রসনা তৃপ্তির যোগান দিয়ে আসছে। চিড়া মুড়ি পিঠা খাওয়া কৃষক পরিবার থেকে শুরু করে সবার কাছে প্রিয়। শীত মৌসুম এলেই উপজেলার সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়োজন শুরু হয়। তাইতো শীত মৌসুমের শুরুইে এলাকার গাছিরা খেজুরের গাছ থেকে ছাল তুলা- চাঁছা আর কাঁটা সহ নলি বসানো কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ সময় এলাকার গাছিদের মুখে ফুটে উঠে রসালো হাসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন