সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ভাঙা ও নড়বড়ে সেতুতে বাড়ছে ঝুঁকি

সেতু বিড়ম্বনায় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর মানুষ

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বেশ কিছু সেতু-ব্রীজ-কালভার্ট এক একটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। জান মালের ঝুকি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে সেতুগুলো দিয়ে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের দুধকুমর নদের উপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত প্রায় ১৩৫ বছরের পুরনা সোনাহাট রেল সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পাড়ে বড় রকমের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থল বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম। নড়বড়ে সেতুটির পাশে আর একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। সেতু নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় সেতুর পূর্ব দিকের ৫টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে অন্তত আরও দুই বছর জীবনের ঝুকি নিয়ে সেতু পারাপার হতে হবে। পাথরডুবী ইউনিয়নের ফুলকুমার নদের উপর নির্মিত থানাঘাট সেতু নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দ্বারা নির্মিত হওয়ায় মেয়াদ ঊত্তীর্ণ হওয়ার আগেই তিন খন্ডে খন্ডিত হয়ে কোন মতে দাড়িয়ে আছে। এক খন্ডের সাথে অন্য খন্ডকে লোহার রড দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। মাস ছয়েক আগে ভাঙ্গা সেতুর পাশে অপর একটি সেতু নির্মাণ শুরু হলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে বর্তমান সেতুটির নিমাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে লোহার রডে বাঁধা সেতুই তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা। যে কোন সময় এই সেতুটি ভেঙ্গে ঘটতে পারে প্রানহানীর মতো দূর্ঘটনা। একই ইউনিয়নের বাঁশজানি গ্রামের নাউডোর সেতুটি এবারের বন্যায় পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলে বাঁেশর সাঁেকা বানিয়ে চলাচল করছে ওই এলাকার জনসাধারণ। বাঁেশর সাঁকো দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে। শিলখূঁড়ি ইউনিয়নের উত্তর ধলডাঙ্গায় গদাধর নদের উপর নির্মিত শালঝোড় সেতু ঠিকঠাক দাঁড়িয়ে থাকলেও সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করেছে প্রায় পনের ফুট লম্বা সংযোগ সড়ক। নদী দ্বারা বিছিন্ন সীমান্তবর্তী শালঝোড়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে বাঁশের সাঁকোর উপরেই নির্ভর করছেন এলাকাবাসী। বলদিয়া ইউনিয়নের বলদিয়া স্কুল এন্ড কলেজের পিছন দিকের রাস্তার উপর নির্মিত সেতুর দুইপাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন ওই এলাকার জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা। একই ইউনিয়নের বলদিয়া মরা শংকোষ নদীর (ছড়া) উপর নির্মিত সেতুর পশ্চিম দিকে এ্যাপ্রোচ সহ সংযোগ সড়ক দীর্ঘদিন যাবত ভাঙ্গা থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেলা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে ওই এলাকার জনসাধারণকে। বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের চর বলদিয়া গ্রামের সড়কের উপর নির্মিত সেতুর এক প্রান্তের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকাবাসীকে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তি।
এব্যাপারে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন জানান, উপজেলার সাথে গ্রামাঞ্চলের যোগাযোগের ৮টি সেতু, ব্রীজ, কালভার্ট ভেঙ্গে এলাকাবাসীর যোগাযোগে দুর্ভোগ বেড়েছে। এবিষয়টি বহুবার সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি দ্রæত এসব সেতু ও ব্রীজের কাজ করে যেন সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করে।
সেতুগুলো সর্ম্পকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ সেতুগুলোর তালিকা প্রণয়ন করে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরাণি¦ত করতে দ্রুত সেতুগুলো মেরামত অথবা সংস্কারের দাবী জানান উপজেলাবাসী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন