বাংলার সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি চাষই সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলাবাসীর আয়ের অন্যতম উৎস। এর মাধ্যমে উপজেলার চিংড়ি চাষী, ৪১টি ডিপো, ৬টি বরফকল, ১টি হ্যাচারী, ২০টি নৌযান ও ১টি অভয়াশ্রমের হাজার হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের কারণে ঘেরের আউট ড্রেন না থাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সড়ক ও পাউবো’র বেড়িবাঁধ। এজন্য সেকেলে পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, ঘেরে পানির নিশ্চয়তার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে বেড়িবাঁধের যত্র-তত্র পাইপ ঢুকিয়ে লোনা পানি উত্তোলন করা হয়। এ কারণে পানি ওঠা নামা করায় বছরে বেশির ভাগ সময় ঝড় জলোচ্ছাসে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় লোকালয়।
সূত্র জানায়, উপজেলায় মোট ছোট বড় ৭৬টি খাল রয়েছে। যার আয়তন ৬৫১ হেক্টর। এ খাল গুলোও ডিসিআর কেটে ইচ্ছামত নেটপাটা দিয়ে মাছচাষ করার ফলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ঘের মালিকরা জমির ৩ দিক বাঁধলেও কখনো রাস্তার ধার বাঁধেন না। ফলে, সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিং সড়ক, ইটের ফ্লাড সোলিং, ইটের সোলিং ও কাঁচা রাস্তা ঘেরের পানির ঢেউয়ে ভাঙতে শুরু করে। রাস্তার ধার ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ৬৫১ হেক্টর খাল ধারের অধিকাংশ স্থানে ইটের সোলিংয়ের রাস্তা রয়েছে। নিজের জমির রাস্তার ধারই কেউ বাঁধেন না, খাল ধারের অংশ তো দূরের কথা। ফলে রাস্তার ইট খুলে খালে ও মৎস্য ঘেরে পড়ছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদগুলোও এদিকে দেখভাল করে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম খান জানান, চিংড়ি চাষের নিয়ম হলো সরকারি রাস্তা বাদ দিয়ে নিজের জমিতে বাঁধ দিয়ে চাষ করতে হবে। চিংড়ি চাষীদের রাস্তার ধার বাঁধার জন্য বলা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার ধারের ঘের মালিকদের নোটিশ করা হয় তারপরেও তারা শোনেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সচেতনতার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন সভা সেমিনারে প্রচার অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন