শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

জরাজীর্ণ ঘরে ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম

ধুলিহর বাগডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সাতক্ষীরা থেকে আবদুল ওয়াজেদ কচি | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের বাগডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বেহাল অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। বেতনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এ বিদ্যালয়টি দ্রæত সংস্কার করা না গেলে শিখন-শেখানো কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম জানান, ১৯৯০ সালে এক বিঘা জমি দান করে আতিয়ার রহমান এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে ৭১ জন শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়টি এসবেস্টরস দিয়ে ছাওয়া। তাও আবার কোথাও কোথাও ভাঙা। বেতনা নদীর তীরে বেড়িবাঁধের পার্শ্ববর্তী রাস্তার পাশে অবস্থান হওয়ায় বর্ষাকালে পায়রার খোপের মত ক্লাসরুমগুলো পড়াশুনার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে স্কুল ছুটি দিতে হয়। আবার ক্লাসরুমগুলো এত ছোট যে, তাতে তিন থেকে চারটি ছোট বেঞ্চ বসানোই দুষ্কর। ছোট একটি টেবিল রেখে চেয়ার ছাড়াই দাঁড়িয়ে ক্লাস নিতে হয় শিক্ষকদের। দরজা খুলে ক্লাস রুমের ভেতরে ঢুকতে গেলেই মাথায় আঘাত খেতে হয়। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য একটি রুম থাকলেও সেখানে বসা যায় না। মাজা ছাড়িয়ে নিতে হলে সেখানে কোন রকমে বসা ছাড়া উপায় থাকে না। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও আজো কোন ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মুন্নি খাতুন জানান, বর্ষাকালে রাস্তা ঘাট কাদাময় থাকে। যে কারণে তাদের স্কুলে যাওয়া আসার সমস্যা হয়। এরপর যদিও স্কুলে আসা গেল সেখানে বসে বসে বই খাতা ছাড়া ভেজানো ছাড়া উপায় থাকে না। তারা ভাল করে পড়াশুনার স্বার্থে স্কুলটি পাকা করার দাবি জানায়।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবু তাহের তামিম, পঞ্চম শ্রেণির সাকিব হোসেন, মুক্তা খাতুন ও দ্বিতীয় শ্রেণির আরাফাত হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, একদিকে বেতনা নদী অপরদিকে বিশাল বিল। এর মাঝখানে অব্দা রাস্তার পাশেই তাদের স্কুলটির অবস্থান। কাল বৈশাখী ও বর্ষাকালের ঝড়ো বাতাসে কয়েকবার চালের একাংশ উড়ে গেছে। শিক্ষক ও সভাপতির চেষ্টায় তা সংস্কার করা হয়েছে। ঝড়ের আগ্রাসী বেগ ও ঝড় বৃষ্টিতে স্কুলে আসা দায় হয়ে পড়ে। তা ছাড়া অভিভাবকরা দেড় কিলোমিটার দূর থেকে স্কুলে যেতে দিতে শঙ্কিত বোধ করেন। ফলে সারা বছর তাদের পড়াশুনা ঠিকমত করা যায় না। সঙ্গত কারণেই কাঙ্খিত ফলাফল অর্জিত হয় না এ স্কুলের।
সাইফুল ইসলাম ও মাজাহারুল শেখসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, একইসাথে বেতনা নদীর তলদেশ পলিতে ভরে ওঠায় পানি উল্টো বিলে ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। ক্লাসরুমের মধ্যে পানি ওঠে। বর্ষাকালে আমন ধান হয় না। বোরো চাষ হলেও ধান পাওয়া যায় কম। এ ছাড়া বেতনার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন চর দখল করে ইটভাটা, মাছের ঘের. সবজি খেত পরিকল্পনা বিহীন স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে ওঠায় বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামিতে এ এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়বে। স্থানীয়দের পেশা পরিবর্তণ করে অন্যত্র চলে যেতে হবে। স্কুলে শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে না।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, তিনি স¤প্রতি যোগদান করেছেন। বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন