শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

৫ ফেভারিটের হালচাল

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঢাকার ফুটপথে এক ফেরিওয়ালাকে দেখা গেল আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-জার্মানির পতাকা ফেরি করতে। তার মানে বিশ্বকাপ ফুটবলের আর বেশি দেরি নেই। আর মাত্র ২৯ দিন বাকি। জুনের ১৪ তারিখ রাশিয়ায় বাঁজবে ফুটবলের দামামা। যে দামামায় উদ্দেলিত হবে পুরো বিশ্ব। দেখতে দেখতে সময় তো ঘনিয়ে এলো। তো আসরের ফেভারিট দলগুলোর কি হাল? কিভাবে চলছে তাদের প্রস্তুতি? এ নিয়ে সর্বশেষ ২০ আসরের ১৩টি শিরোপা জয় করা ফেভারিট ৫ দলকে নিয়ে বিশ্লেষনধর্মী রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। চলুন সেদিকে চোখ বুলানো যাক তার দিকে-

জার্মানি
আসরের চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলও তারা। দলটির প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের ফিটনেস অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। গত সেপ্টেম্বরে পায়ের হাড় ভেঙ্গে যাবার পর থেকে সাইডলাইনেই কাটাছে ৩২ বছর বয়সি বায়ার্ন মিউনিখ গোলরক্ষকের সময়। গত সপ্তাহে তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচ অনুশীলন না করেই এরকম বিশাল একটি টুর্নামেন্টের দলে ঢুকে যেতে পারব-আমি এমনটা মনে করি না।’ পরিবর্তিত হিসেবে জার্মান স্কোয়াডের জন্য রয়েছেন বার্সেলোনার গোল রক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান। স্টেগানও অবশ্য বার্সার হয়ে দুর্দান্ত ফর্মেই আছেন। ফলে জার্মান ভক্তরা একটু নির্ভার থাকতেই পারেন।
জার্মানিকে ২০১৪ আসরের শিরোপা এনে দেয়া কোচ জোয়াচিম লো এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। বিশ্বকাপের দল গঠনের জন্য তিনি ডেকে আনতে পারেন জসুয়া কিমিচ, লিয়ন গোরেৎকা ও টিমো ওয়ার্নারের মত খেলোয়াড়দের। এবারের আসরের জন্য নিজের ফিটনেস প্রমাণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী মার্কো রিউস।
বাছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় পাওয়ার পরও জার্মানী সম্প্রতি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রাজিলের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে জয়লাভে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তারা বিশ্বের শীর্ষ র‌্যাংক ধরে রেখে প্রতিটি বিশ্বকাপেই দক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে।

আর্জেন্টিনা
বিশ্বকাপকে মাত করে রাখতে এই দলটির জুড়ি নেই। ২০১৪ আসরের ফাইনালে হতাশাজনক পরাজয়ের পর বিশ্বকাপ শিরোপা স্পর্শ করার এবারই সুবর্ণ সুযোগ আলোচিত তারকা লিওনেল মেসির জন্য। বছাইপর্বে ধুঁকতে থাকা আর্জেন্টিনাকে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার টিকিট এনে দিয়েছেন এই ফুটবল জাদুকরই। ইকুয়েডরের বিপক্ষে তার গুরুত্বপূর্ণ হ্যাট্রিকই মান বাঁচায় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। অন্যথায় কোচ জর্জ সাম্পাওলির দলকে নিয়ে ছিল শঙ্কা। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘মেসি দলটিকে একাই টেনে নিয়ে যেতে পারেন।’ তবে অসাধারণ দক্ষতাসম্পন্ন তারকা সার্জিও অগুয়েরো ও পাওলো দিবালার মত তারকার সন্নিবেশ ঘটিয়ে তিনি এই দলকেই এগিয়ে নিতে পারেন বিশ্বকাপের শেষ ধাপ পর্যন্ত।

ব্রাজিল
বিশ্বকাপ আর ব্রাজিল যেন অনেকটাই সমর্থক শব্দ। রেকর্ড ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এবারো অংশ নিচ্ছে ফেভারিট হিসেবেই। ২০১৪ সালে নিজ মাটিতে বিশ্বকাপে সেলেসাওরা অংশ নিয়েছিল তাদের তরুন তারকা নেইমারের কাঁধে ভর করে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দলকে জয় এনে দেয়ার পরেই পিঠের ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। এতেই ভেঙ্গে পড়ে দলটি। সেমি-ফাইনালে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় জার্মানির কাছে।
ব্রাজিলের সেরা স্ট্রাইকার চার বছর পর আসন্ন টুর্নামেন্টের আগেও শংকিত ফিটনেস নিয়ে। গত ফেব্রæয়ারিতে পিএসজির হয়ে খেলার সময় পায়ের গোঁড়ালিতে আঘাত পান বিশ্বের সবচেয়ে দামী এ ফুটবল তারকা। এরপর অস্ত্রোপাচার করানো নেইমার এখনো ফিটনেস ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এরই মাঝে ব্রাজিল ভক্তদের জন্য জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দিয়েছে দানি আলাভেসের ইনজুরি। নেইমারের পিএসজি সতীর্থ আলাভেস হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে ইতোমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছেন। ব্রাজিলের জন্য যা বড় এক ধাক্কা। তবে নুতন কোচ তিতের অধীনে ব্রাজিলের বর্তমান দলটি ২০১৪ সালের চেয়ে অনেক ভাল চেহারায় রয়েছে। দক্ষিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে বেশ সহজেই শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষা করে বিশ্বকাপের টিকিট নিয়েছে তারা।

স্পেন
এই দলটির খেলার ধরণ জার্মানি ও ব্রাজিল থেকে অনেকটাই আলাদা। ফুটবল মাঠে যেন সবাই মিলে শিল্প রচনা করে স্পেন। যার সাক্ষ্যি হয়েছল ২০১০ বিশ্বকাপ। ওটাই একমাত্র শিরোপা দলটির জন্যে। এরপর ভিসেন্তে দেল বস্কের অধীনে সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপের মঞ্চে দুর্বল পারফর্মেন্সের পর তার উত্তরসুরি জুলিয়ন লোপেতেগুইয়ের অধীনে ফের জ্বলে উঠেছে স্পেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর সাবেক এই গোলরক্ষক এখনো কোন ম্যাচে হারেননি। বাছাই পর্বে হাতছাড়া করেছে মাত্র দু’টি পয়েন্ট। সম্প্রতি এক প্রীতি ম্যাচে তারা ফুটবল পরাশক্তি আর্জেন্টিনাকে ধরাশায়ী করে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে।
সার্জিও রামোস ও জেরার্ড পিকের সঙ্গী হিসেবে দলের রক্ষণভাগটি এখনো সামলে চলেছেন ডেভিড ডি গিয়া। আর আক্রমনভাগের সৈনিক ডেভিড সিলভা ও ইসকোর মত তারকাকে সামলানো যে কোন দলের জন্যই বেশ কঠিন। তাদের সমর্থনে থাকছে অভিজ্ঞ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
সম্প্রতি ফিফা ডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোচ লোপেতেগুই এই বার্সেলোনা তারকা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এখনো তিনি ভাল খেলতে পারায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা বিশ্বকাপেও তার এমন পারফরমেন্স দেখতে চাই।’

ফ্রান্স
ঘরের মাঠে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে একমাত্র শিরোপা জয়ের পর তেমন কিছু করতে না পারলেও প্রতি আসরেই ফেভারিটদের তালিকায় থাকে ফ্রান্সের নাম। নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত ইউরো ২০১৬ আসরের ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরে কিছুটা ভারাক্রান্ত রয়েছে দলটি। যে চাপটি এখনো বহন করে চলেছেন কোচ দিদিয়ের দেশ্যম। যদিও বেশ নির্ভার একটি স্কোয়াড পেয়েছেন তিনি।
কয়েকটি ম্যাচে অপ্রত্যাশিত খারাপ পারফর্মেন্সের পরও দেশ্যমের দলটি বছাইপর্বের সবগুলো ম্যাচে জয় লাভ করেছে। অবশ্য লুক্সেমবার্গের সঙ্গে একটি হোম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে ব্যাপক সমালোচানর মুখে পড়েছেন তিনি। ওই সমালোচনা থামানোর জন্য এখন তাকে একটি সেরা স্কোয়াড গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে আক্রমণভাগ। যেখানে মূল ভূমিকাটি পালন করছেন অঁতোয়ান গ্রীজম্যান। তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপেও এখন আলোচিত নাম। দলীয় সাফলতার জন্য একধাপ এগিয়ে খেলতে হবে পল পগবাকেও।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন