শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাহিত্য

এ সপ্তাহের পদাবলি

| প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৭ এএম


সৈয়দ আসরার আহমদ
কুসুমকলি ও কৃষ্ণকলি সংলাপ

কুসুমকলিকে ডেকে কৃষ্ণকলি বলে,
এ জীবনে সুখ ছাড়া দুঃখও তো মেলে।
কুসুমকলি বলে, সুখ কি? আর দুঃখই বা কি?
বুঝি না সেসব!
বৃন্তে ঝুলে বেশ আছি এই তো, এটাই উৎসব।
তুমি বুঝি সুখ পেয়ে দুঃখের পেয়েছ খোঁজ!
তাই কৃষ্ণনামের গুণকীর্তন করো প্রভাতে রোজ?
কৃষ্ণকলি হেসে বলে, তোর কি তাই মনে হয়?
এতো বড় বিস্ময়!
বৃন্তে আছিস ঝুলে বাতাসে খাচ্ছিস দোল,
তোর জীবনে এখন দুঃখ বা সুখের নেই কোনও রোল!
কুসুমকলি বলে, কথাটা বলেছ মোক্ষম!
কিন্তু সবাই কি আর সুখ পেয়ে আনন্দে আছে?
আনন্দ কি ফলে গাছে গাছে!
এ মা! জানো না তুমি কত কুসুমকলি বৃন্তে
ঝরে গেছে হিসাব রেখেছ তার?
কুসুমকলির কথা শুনে কৃষ্ণকলি থ!
বলে, বোঁটাতেই পেকে গেছিস যা চুপে যা।

সুমন আমীন
এসো ভেজায় হৃদয়

এই মায়াবী কুহকে এসো ভেজায় হৃদয়।
দূর পাহাড়ের বুকে
ডেকে উঠে অচিন পাখি
ডেকে উঠে বুকের গহীনে প্রেমজ সুর
চাঁদের আলোয় কম্পমান তোমার চোখ
জুমঘরে খেলা করে
আমাদের অব্যক্ত কামনার শরীরে শরীরে।
তোমার কাঁধে মাথা রেখে
কংলাক পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায়
বসে বসে
কাটিয়ে দিতে পারি
জীবনের অনাগত হাজারো মুহূর্ত।
এসো ওই মেঘের ভেলায় চড়ে
পাড়ি দেই অচেনা আঁকাবাঁকা পথ
মুছে ফেলি পেছনের দু:সহ অতীত।
শীতল ঝর্ণার প্রস্রবনে ধুয়ে ফেলি
আমাদের যৌথ বিরহের কষ্টসব।
এসো বন্ধুর পাহাড় চূড়ায় দুর্গম পথের বাঁকে
উষ্ণ মরুর বুকে খুঁজি শীতল হৃদয়টাকে।

রাজু ইসলাম
প্রাত্যয়িক

স্থির অবয়বে তোমার অবিশ্বাসী চোখ
প্রাণাধিক প্রিয় প্রাত্যয়িক সময়গুলোÑ
চেতনাহীন ডুকরে বাতাসকে বিষাক্ত করে তোলে
প্রতিটি নিশ্বাসে তোমার অবিশ্বাসের চোখা আঙ্গুল।
অতি নির্মল বিনয়াবনত চিত্ত অন্তরিন্দ্রিয় তোমার
ইত্যবসরে লোপ পেয়ে ঘৃণ্য সমাপকে পরিণত।
নিয়ত পর্যাসে পরাভূত সন্তপ্ত হৃদয়
ক্রমশ লয়প্রাপ্ত স্বপ্ন বিবর্জিত অন্তর।
প্রণিত হয় বাদানুবাদের অজস্র সূত্র
কুহকে তোমার পরিশ্রান্ত হৃদয় হয় বিনিদ্র,
ক্রমান্বয়ে সূচিত হতে থাকে দিগন্তসম দূরত্ব;
কৃপার আরাধনা ভ্রমে তুমি হও সংশয়িতা।

শাহীন রায়হান
তোমার শিলালিপি

এখানেই বিলুপ্ত তোমার শিলালিপি কাল্পনিক ছবির যমজ দুটি চোখ
যেখানে চাঁদের জ্যোৎস্না হারায় কালো ধোঁয়ারঅন্তারালে
এখানেই কেউ কেউ ঝলসে গেছে কালেরপ্রবাহে
সভ্যতার লেলিহান আগুনে
কোথায় হারিয়ে গেছে ডায় ডায় বায় বায় মিত্তিকা
কর্ষিত জীবন লাঙ্গল
কালা মিয়ার প্রাণ স্পন্দন জোড়া বলদ
ফারুক মৃধার স্বপ্ন গোয়াল
মায়ের অতৃপ্ত দুগ্ধ স্বপ্নাবেশ
কলের লাঙ্গলের ভোঁ ভোঁ শব্দ মিছিলে।

উজ্জ্বল দত্তের কবিতা
যখন ভুলেই যাবে

যখন ভুলেই যাবে তখন কি আর হবে
তিথি নক্ষত্রের কুষ্ঠি জেনে!
কৃষ্টি কালচার জাত ধর্ম নিয়ে
কবে অমাবস্যা আর কবে পূর্ণিমা
একাদশী কিবা দ্বাদশী,
কি আর হবে জেনে যখন ভুলেই যাবে!
রাতের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে
ভোরের শুভ্র আকাশ পাপড়ি মেলে
কতটা নীলে নীল হয়েছে,
কতটা ছুঁয়ে গেছে স্বপ্নময় নদী
কক্ষ পথ ভেদ করে
কি আর হবে জেনে যখন ভুলেই যাবে!

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন