বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়েনি। ফলে বাড়ছে বেকারত্ব। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ বছর। গড় আয়ু ৭১.৬ বছর হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স কেন ৩০-এ থমকে থাকবে? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করতে সেশনজট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রভৃতি কারণে ২৬-২৭ বছর লেগে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭’ অনুসারে বর্তমানে প্রায় ২৭ লাখ বেকার। নীতিনির্ধারকরা জনসংখ্যাকে জনসম্পদ বলে আতœতুষ্টি লাভ করলেও বাস্তবে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যাচ্ছে। গত দুই বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে উন্নীত হলেও বেকারের সংখ্যা কিছুতেই কমছে না। অনেকে একে ‘কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি’ বলে উল্লেখ করেছেন। সরকারি নিয়ম অনুসরণ করার ফলে বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে জনবল নিয়োগ দিচ্ছে না। গড় আয়ু বাড়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়েছে। আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। আবার ‘যুবনীতি ২০১৭’-তে যুবদের বয়স ১৮-৩৫ রাখা হয়েছে। তাহলে কেন চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ রাখা হবে?
শিক্ষিত বেকার দেশের বোঝা নয়, মূলত দেশের সম্পদ! উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষিত তরুণদের কাজে লাগাতে দেশের উন্নয়নে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো প্রয়োজন। বেকাররা দেশের অভিশাপ নয়, তারাও সুযোগ পেলে দেশের ও পরিবারের জন্য কিছু করতে চায়। নীতিনির্ধারকদের সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় বড় ধরনের জনশক্তি অপচয় হবে। পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত রাষ্ট্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০-এর ওপরে। সারা বিশ যেখানে শিক্ষিত সন্তানদের কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা ৩০-এর দেয়াল তুলে দিয়েছি চাকরিপ্রত্যাশীদের ওপর। তাই তরুণ জনগোষ্ঠীর যুক্তিসঙ্গত, যুগোপযোগী ও সময়ের দাবি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হোক।
সাধন সরকার
ছাত্র, প্রথম ব্যাচ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ১১০০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন