আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণের দুই সপ্তাহ কেটে গেছে। চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনায় বেড়েছে পানি। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে থেমে থেমে। কিন্তু কাক্সিক্ষত ইলিশের দেখা পাননি জেলেরা। আগে এ মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লেও পদ্মা-মেঘনা থেকে এখন জেলেরা ফিরছেন খালি হাতে। কেউ কেউ স্বল্প সংখ্যক ইলিশ পেলেও তা দিয়ে নৌকার জ্বালানি খরচও মিটছে না। দিনে-রাতে হাজার হাজার জেলে নদী চষে বেড়ালেও তারা আশা ছাড়ছেন না। শেষ ভরসা হিসেবে মনে করছেন ভাদ্র মাস থেকে ইলিশ ধরা পড়বে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ঘাট ও শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে কথা হয় ইলিশ ব্যবসায়ী ও জেলেদের সঙ্গে। তারা জানান, চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি চলাকালে কিছু অসাধু জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে জাটকা নিধন করেছে। যার কারণে নদীতে পানি বাড়লেও এখনো অভয়াশ্রম এলাকায় তেমন ইলিশ নেই। যার প্রভাব ইলিশ ব্যবসায়ী ও জেলেদের মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। হরিণা ফেরিঘাট এলাকার প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী সিরাজ ছৈয়াল বলেন, ‘আগে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে ইলিশের আমদানি বাড়লেও এখন আর তা হয় না। অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ইলিশের আমদানি বাড়ে। তবে এ বছর কারেন্ট জাল দিয়ে এক শ্রেণির জেলে অবাধে জাটকা নিধন করেছে।’ মতলব উত্তর উপজেলার মৎস্যজীবী নেতা ওমর ফারুক প্রধানিয়া বলেন, এবার আমাদের এলাকায় জেলেরা প্রায় ৯৫ ভাগ জাটকা নিধন করেছেন। তাদেরকে প্রশাসন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
ইউসুফ মাঝি বলেন, ‘ঋণ নিয়ে নৌকা-জাল করেছি। মৌসুমের প্রায় অর্ধেক সময় পার হচ্ছে, কিন্তু ইলিশের দেখা মেলেনি। এভাবে চলতে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। এদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে পারছি না।’ ইউসুফের মতো চাঁদপুর মেঘনার হাজার হাজার জেলে মহাজনের ঋণের জালে বন্দি।
ব্যবসায়ী মো. ফারুক বলেন, চাহিদার ১০ ভাগের একভাগ ইলিশও মিলছে না। আর পদ্মা-মেঘনার এক কেজি ওজনের ইলিশের মূল্য দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ শ’ টাকায়।
জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মানিক দেওয়ান বলেন, মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মতলবের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর-আলেকজান্ডার পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার এক শ’ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের জাল ফেলা নিষিদ্ধ। এ সময়ে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ প্রবেশের সব রুট বন্ধ করে দিতে হবে। তা না হলে জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি সফল হবে না। জাটকা নিধন বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে জানিয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, ‘নদীতে ইলিশ মাছ এখনো আসেনি। পাহাড়ি ঢল ও নদীতে খরস্রোত দেখা দিলে ইলিশের দেখা মিলবে। আশা করছি, ভাদ্র মাস থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইলিশ পাওয়া যাবে। রামগতি ও কমলনগরে
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন