বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

৫ টাকার টোল ৪৫ : তবুও দুর্ভোগ

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে আবদুল হালিম দুলাল | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাথে শরণখোলা উপজেলার সাথে যোগযোগের একমাত্র পথ বলেশ্বর নদের বড়মাছুয়া আন্তঃবিভাগীয় খেয়া ঘাটে ৮/১০ গুণ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত টাকা দিতে পারলে ইজারাদার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার ও নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও কোন সাড়া মিলছে না বলে যাত্রী সাধারণের অভিযোগ।
জানাযায়, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় হতে বাংলা ১৪২৫ সালের জন্য বড়মাছুয়া আন্তঃবিভাগীয় খেয়া ঘাটটি ২২লাখ ৩২হাজার ৭শ’৮০ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় ইউ,পি সদস্য কাইয়ূম হাওলাদার ইজারা পায়। ১৫% মূল্য সংযোজন কর ও ৫%আয়করসহ মোট টাকা দাড়ায় ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩শ’৩৬ টাকা। সরকারী নিয়মে ঘাট সাব লীজ দেয়া বেআইনী হলেও ইজারাদার কাইয়ুম স্থানীয় ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, ইদ্রিস বেপারী, আঃ ছালাম হাওলাদার ও ডালিম ফিডারের কাছে ৩৬লাখ ৮৫ হাজার টাকায় সাব লীজ দিয়েছে। সাব-লীজ গ্রহিতারা সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে কয়েক গুণ টাকা বেশি আদায় করছে। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবন্ধী ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টোল আদায়ের নিয়ম না থাকলেও তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টোল।
বলেশ্বর নদীর দু’পাড় উপকূলীয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বাগেরহাটের শরণখোলার রায়েন্দায় এ খেয়াঘাট অবস্থিত ফেরী পাড়াপাড় বা সড়ক বা বিকল্প পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় এ খেয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন খুলনা, মংলা, চালনা, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, বরগুনা, পাথরঘাটা, বামনা ও মঠবাড়িয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় সহস্রাধীক মানুষ যাতায়াত করে।
সরজমিনে ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, খেয়া পারাপারে সরকার নির্ধারিত টোল জনপ্রতি ৫ টাকার স্থলে ৪৫ টাকা এবং মটরসাইকেল চালকসহ ১০ টাকার স্থলে ইজারাদারের লোকজন (চালক ৪০ টাকা ও মটর সাইকেল ৬০/৭০ টাকা আদায় করে) মোট ১শ থেকে ১’শ ১০ করে আদায় করছে। বড়মাছুয়া ও রায়েন্দা ঘাট সংলগ্ন প্রকাশ্যে টোল চার্ট বোর্ড টানিয়ে নির্ধারিত টোল আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এছাড়াও লীজ গ্রহনকারী ইজারাদারের ঘাট নির্মান ও সংরক্ষনের নিয়ম থাকলেও নিজস্ব ঘাট না থাকায় বড়মাছুয়া ও রায়েন্দার সরকারী পল্টন ব্যবহার করায় খেয়ার প্রতি যাত্রীকে অতিরিক্ত ৫ টাকা গুনতে হচ্ছে।
স্থানীয় জানখালী গ্রামের হতদরিদ্র জেলে জলিল শেখ অভিযোগ করেন গত ১৬ জুলাই তিনি রায়েন্দা থেকে খেয়াযোগে বড়মাছুয়া আসার পর সাবলীজ গ্রহণকারী সালাম বেপারী তার কাছ থেকে ৪০ টাকা খেয়া ভাড়া চায়। বাড়তি টাকা দিতে না পারায় টোল আদায়কারী তার সাথে দুর্ব্যবহার করে লঞ্চ পল্টনে তাকে ৩ ঘন্টা বসিয়ে রাখে। পরে স্থানীয় আবু হানিফ নামে এক ব্যক্তি তাকে ছাড়িয়ে নেয়। তিনি বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন বলে জানান।
ঘাট ইজারাদার ও বড়মাছুয়া ইউপি সদস্য কাইয়ুম হাওলাদার তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিঘ্রই খেয়াঘাট সংলগ্ন টোল চার্ট টানানো হবে।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আহাম্মদ ছিদ্দিকী বলেন, খেয়া পারাপারকারী যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন