মাগুরার মানুষ ঈদ পার্বণেসহ ছুটিতে এবং বিকেলের অবসরে ছুটে আসছেন শহরের পার্শ্ববর্তী পারনান্দুয়ালী হাউজিং সোসাইটির কাঁশবনে। বিনোদনপ্রিয় মানুষের ভিড়ে নবরূপ ধারণ করেছে এ কাঁশবন। শহর জীবনের ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তির জন্য মাগুরায় কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় তারা বেছে নিয়েছে নৈসর্গিক প্রাকৃতিক এ কাঁশবনকে।। মাগুরা শহরে কোনো বিনোদনের ব্যাবস্থা না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে একটু স্বস্থির আশায় যুবক-যুবতী শিশু-কিশোররা বিকেলে ছুটে আসে এ কাঁশবনে। তিন দিকে নদী আর বিশাল কাঁশবন মাঝে মাঝে চওড়া রাস্তা শিশু-কিশোরদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর বেড়ানোর জন্য খুবই উপযোগী। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন, তেমনি মনের প্রসস্তির জন্য প্রয়োজন বিনোদনের। মাগুরায় কোনো বিনোদনের ব্যবস্তা নেই। তাই এই কাঁশবনের নৈসর্গিক আবহে এবং কাঁশফুলের আমন্ত্রণে শহরের বন্দী জীবন থেকে একটু স্বস্থি পেতে পড়ন্ত বিকেলে শত শত শিশু-কিশোর, যুবক যুবতীসহ বিনোদন পিপাসুরা ছুটে আসছে এ কাঁশবনে। নতুন ও নানান রঙবেরঙয়ের পোশাকে প্রতিদিন মানুষের উপস্থিতিতে এখানে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে কাঁশবন ভ্রমণপিপাসু মানুষের কলরবে মুখর হয়ে ওঠেছে। এলাকা ধারণ করে নতুন রূপ। কুশল বিনিময়সহ এখানে চলে প্রাণখুলে আড্ডা আর নানানধরনের ফটো সেশন। সেই সাথে রয়েছে নৌকা ভ্রমণের সুবিধা। ছোট ছোট নৌকা রয়েছে শারি শারি সাজান। ইচ্ছে হলেই ভাড়া করে ঘুরে বেড়ান যায় তিন দিকে কুমার নদী পরিবেষ্টিত এ হাউজিং প্রকল্পের এলাকায়। মানুষের এ মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে ঝালমুড়ি, ফুসকাসহ নানা ধরনের খাবারের দোকানের পসরা বসিয়ে দোকানিরা অর্থ উপার্জনে লেগে গেছে। মানুষের দেহের জন্য খাদ্যের পাশাপাশি বিনোদনের প্রয়োজন থাকলেও মাগুরায় কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। অনুন্নত এলাকা হিসেবে মাগুরায় সরকারি বা ব্যবসায়ীকভাবে কেউ কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন মনে করেনি। আর এ কারণে এলাকার কিশোর-যুবকরা অসুস্থ বিনোদনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সে অবস্থার মধ্যে এই এমনি এমনিতেই গড়ে ওঠা বিনোদন কেন্দ্রটি কিছুটা হলেও সুস্থ বিনোদনের সুযোগ দিচ্ছে। বিভিন্ন পার্বণসহ বিভিন্ন ছুটিতে মানুষের মন চায় বদ্ধ ঘর থেকে একটু মুক্ত বাতাশে ঘুরে বেড়াতে। আর এ জন্যে প্রতিদিন বিকেলে রিকশা অটো রিকশায় চেপে এমন পায়ে হেটে ভিড় জমায় এ কাঁশবনে। বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার এ কাঁশবনে মানুষের মিলনমেলায় মুখরিত হয়ে ওঠে। মাগুরায় কোনো পার্ক না থাকায় মাগুরার মানুষ এ স্থানকেই বিনোদনের স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে দেহ- মনের স্বস্থির জন্য। মানুষের উপস্থিতিতে এলাকা মানুষের আনন্দ প্রকাশের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ কাঁশবনে ভ্রমণে এসে অনেক্ইে তাদের খুশির কথা জানান। এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন সবসময় রাখে কঠোর নজরদারী। মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহম্মাদ রেজোয়ান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, এ হাউজিং প্রকল্পের কাঁশবনে পুলিশের নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে কেউ কোনো বিশিৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পার পাবে না বলে ও তারা জানান। শুক্রবার বিকেলে এ কাঁশবনে যেয়ে দেখা যায়, মানুষের কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে কাঁশবন এলাকা। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে জনৈক ব্যবসায়ী শহরতলীর আঠারখাদা এলাকায় থিম পার্ক নামে একটি পার্ক তৈরি করেছিল। পার্কটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা না থাকায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মাগুরায় আর কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় এ কাঁশবনকেই বিনোদনের স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে বিনোদন প্রিয় মানুষেরা। মানুষের প্রয়োজনে এটিকে রক্ষণাক্ষেণ এবং বিনোদনের আরো সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত বলে মত পোষণ করেছেন অনেকেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন