রংপুরের পীরগাছায় পতিত বিলে ভাসমান বেডে সবজি চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। কচুরিপানা পচিয়ে বেড তৈরি করে এর ওপর নানা জাতের সবজি চাষ করছে কৃষক। এক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণসহ কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। এ পদ্ধতিতে আবাদকৃত সবজির ফলনও ভালো হচ্ছে।
উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের হাড়োডাঙ্গা বিল এতদিন পতিত অবস্থায় ছিল । কচুরিপানায় ভরপুর ছিল ৪৭ একরের বিলটি। সম্প্রতি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগীতায় ওই বøকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মÐল ভাসমান সবজি চাষে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন। পাশাপাশি কারিগরি সহায়তাও দেয়া হয়। ভাসমান বেডে সবজি চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় না। তাছাড়া কোনো কীটনাশকও দিতে হয় না। ফলে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন হচ্ছে।
সরেজমিনে হাড়োডাঙ্গা বিল ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার ২০ জন কৃষক ভাসমান বেড তৈরি করে তার ওপর চাষ করছে পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, লাল শাক, পালংশাক, কলমি শাক, ঢেঁড়শ, বরবটি, লাউ ও সিম। এতে দেখা যায় মাসখানেকের মধ্যেই সবজি বাজারজাতের উপযোগী হয়ে পড়ে। যা একদিকে তাদের পুষ্টির চাহিদা মিটাতে সক্ষম হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন। এসব এলাকায় ভাসমান বেডে সবজি চাষ নতুন বলে কৃষকদের মধ্যে উতসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, এবারই বিলটিতে কয়েকটি ভাসমান বেড তৈরি করে নানা জাতের সবজির চাষ করা হয়েছে। আগামীতে বিলটিতে আরও বেশি বেড তৈরি করে সবজি চাষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
কৃষক বাবলু মিয়া জানান, ২০ ফুট পানির ওপর ভাসমান বেড করা খুবই কষ্টসাধ্য। কষ্ট হলেও আমরা সাফল্য পেয়েছি। বাজারে এই বেডের সবজির প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মণ্ডল বলেন, একই বেডে এক সবজির তোলার পর অন্য সবজি চাষ করা যায়। বেডে উৎপাদিত সবজি সম্পূর্ণ বিষমুক্ত। তাছাড়া খরচও তুলনামূলক কম। ফলে কৃষক বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার লাগেনা। ফলে সবজির গুনগত মান ও স্বাদ অক্ষুণ্ন থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নেও ছড়িয়ে দেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন