টানা চারদিন ভোগাস্তির পর অবশেষে স্বস্তি ফিরেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। গতকাল রোববার ভোর থেকেই কমতে শুরু করেছে যানজট, কমেছে গাড়ির চাপও। চারদিন পর যাতায়াতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় স্বস্তি বিরাজ করছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মাঝে। দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের স্বাভাবিক চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসযাত্রী কামরুজ্জামান জনি দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেই কোন যানজট। তিনি রোববার দুই ঘন্টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লায় এসে পৌঁছান। অথচ তিনি, গত শনিবার কুমিল্লা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে মহাসড়কের রায়পুরে এসে যানজটে আটকা পড়েন, বাস থেমে থেমে চলার কারণে দীর্ঘ ৮ ঘন্টায় ঢাকায় পৌছান। তার অভিযোগ, হাইত্তয়ে পুলিশের গাফলতি আর দায়িত্ব অবহেলার কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে যানজটের প্রধান কারণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। গত কয়েক দিনে এ নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। তখনই হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ নাড়াচাড়া দিয়ে বসে। মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের যানজট কখনো ৬ ঘন্টা, কখনো ৮ ঘন্টা আবার ১০ ঘন্টা যানজট ছাড়িয়ে যায়। যানজট লাগছে ৪০ কিংবা ৭০ কিলোমিটার জুড়ে।
কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী তিশা পরিবহনের যাত্রী গোলাম মাজেদ নিপু দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাইত্তয়ে পুলিশ ইচ্ছা করলেই মহাসড়ক সবসময় যানজট মুক্ত রাখতে পারেন। যানজটে জনসাধারণ ভোগান্তির শিকার হলেও এ দিকে কর্ণপাত করছে না হাইওয়ে পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ পয়েন্টে নির্ধারিত বাসস্ট্যান্ড থাকার পরও বাস-মিনিবাসগুলো মূল সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। তারা ট্টাফিক পুলিশেরও তোয়াক্কা করছে না। এছাড়াও রাস্তার ওপর রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, বাস, মিনিবাস, ট্টাক, লরি কভার্ডভ্যান পার্কিং করা থাকে।
এদিকে যানবাহন নিরাপদ ও নির্বিঘে চলাচলের লক্ষ্যে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ২১ টি হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও থানা স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু হাইওয়ে পুলিশ রাস্তার পাশে এবং ওপরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকান, হাটবাজার অবৈধ স্ট্যান্ড, এলোপাতাড়িভাবে গাড়ি রেখে যাত্রী উঠানো-নামানো বন্ধ করতে পারেনি। তবে হাইওয়ে পুলিশের বিভিন্ন ফাঁড়িতে কর্তব্যরত সদস্যরা জানান, দু’এক মিনিটের জন্য রাস্তা বন্ধ হলেই বাস ট্টাক, প্রাইভেটকারসহ শত শত গাড়ি রং সাইডে (উল্টোপথ) দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার বলেন, সরু রাস্তার কারণে কখনও যানজট হয় না। এর প্রধান কারণ ট্টাফিক ম্যানেজমেন্ট। মহাসড়কে অযান্ত্রিক যানবাহন চলতে দেয়া উচিত নয়। রাস্তা দিয়ে হঠাৎ করে মানুষ পার হতে গেলে কিংবা গাড়ি ইউর্টান নিতে গেলে দ্রুতগামী গাড়ির গতি কমে, দুর্ঘটনা ঘটে। চালকরা অনেকেই অশিক্ষিত। চালক ও যাত্রীরা অল্পতেই অধৈর্য হয়ে পড়েন। সিগন্যাল পড়ামাত্রই তারা রং সাইড দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সবাইকে সচেতন হওয়ার কথাও বলেন প্রকৌশলী। তিনি বলেন, যানজট কমাতে প্রয়োজন জনসচেতনতা, সমন্বিত প্রচেষ্ট, ট্টাফিক আইনের সঠিক প্রয়োগ। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাইত্তয়ে পুলিশ সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে কোথাও যানজট দেখা নিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন